
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফণীর’র আঘাতের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১৬টি বড় জাহাজ সরিয়ে গভীর সমুদ্রে পাঠানো হয়েছে। বন্দরে রেড অ্যালার্ট-৩ জারি করা হয়েছে। সব ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রাম সুমদ্রবন্দরে।
বন্দরের জেটি ও বর্হিনোঙ্গরের জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। বাতিল করা হয়েছে বন্দরসহ চট্টগ্রামের জেলা ও উপজেলার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নার্সদেও ছুটি। আবহাওয়া অধিদফতর চট্টগ্রাম বন্দরকে ৬ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, আবহাওয়া অধিদফতরের সতর্ক সংকেতের ওপর নির্ভর করে চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশন ধাপে ধাপে বন্ধ করা হয়।
সর্বশেষ চট্টগ্রাম বন্দরকে ৬ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী বন্দর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে-যোগ করেন বন্দরের পরিচালক।
এদিকে, কর্ণফুলী থেকে কোনো লাইটারেজ জাহাজও বঙ্গোপসাগরে বর্হিনোঙ্গরে যাচ্ছে না। ঝুঁকি এড়াতে বন্দরের জেটি থেকে সব জাহাজকে বর্হিনোঙ্গরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেটিতে ক্রেনসহ কনটেইনার ও পণ্য ওঠানামায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম শক্তভাবে বেঁধে রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানিয়েছেন, আবহাওয়া বিভাগের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর বিপদসংকেত জারির পর বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট-থ্রি জারি করা হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর ও বর্হিনোঙ্গর মিলিয়ে বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে মোট জাহাজ ছিল ১৬৮টি। এর মধ্যে পণ্যবোঝাই জাহাজ ছিল ৮০টি।
আবার এর মধ্যে ১৬টি জাহাজ জেটিতে পণ্য খালাসের জন্য নোঙ্গর করা ছিল। বাকি ৬৪টি জাহাজ ছিল বর্হিনোঙ্গরে। ৬ নম্বর বিপদসংকেত জারির পর জেটি থেকে ১৬টি জাহাজকে সরানো হচ্ছে।
জেটি জাহাজশূন্য করার পাশাপাশি কি গ্যান্ট্রি ক্রেন, শোর ক্রেন, আরটিজি, স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ারসহ সব ধরনের কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট বুম আপ করে অ্যাংকর করার প্রস্তুতি চলছে।
ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে যাতে আমদানি-রফতানি পণ্যভর্তি কনটেইনারের ক্ষয়ক্ষতি না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
নগরীর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাগর এই মুহূর্তে খুবই উত্তাল আছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ উপকূলবর্তী ১৪টি জেলার চরসংলগ্ন সাগরে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হতে পারে। এতে জেলাগুলো প্লাবিত হতে পারে।