
ভারতের দিকে প্রবল বেগে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়। এ নিয়ে উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফণীর আঘাত মোকাবেলায় রাজ্যে তিনটিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকাগুলো থেকে ৮ লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে ১০৪টি ট্রেন। কিন্তু ফণী নিয়ে মোটেও আতঙ্কিত নয় অন্ধ্র প্রদেশের বিজয়নগরাম গ্রামের বাসিন্দারা। বরং তারা এই ঘূর্ণিঝড়কে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।
সাম্প্রতিক সময়ে খরার কারণে ভয়ঙ্কর পানি সংকট মোকাবেলা করছে বিজয়নগরাম গ্রামের বাসিন্দারা। গত ৫০ বছরে এমন ভয়াবহ সংকটে পড়েনি তারা। প্রতিদিন মাত্র দেড় কোটি লিটার পানি পায় সেখানকার মানুষ। কিন্তু, চার লাখ জনসংখ্যার জন্য সেখানে প্রতিদিন পানির প্রয়োজন সাড়ে চার কোটি লিটার। বিজয়নগরাম জেলায় অবস্থিত চম্পাবতী, ঝানঝাবতীসহ বেশিরভাগ নদীর পানিই শুকিয়ে গেছে।
এমন খরা আর তীব্র পানি সংকটের কারণে সেখানকার লোকজন ঘূর্ণিঝড় ফণীর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতে খরাপ্রবণ এলাকাটির পানি সংকট কমবে। সে কারণেই তারা ফণীকে স্বাগত জানাচ্ছে। যদিও জেলার বেশ কিছু স্থানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে ঘূর্ণিঝড়।
ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও ঘূর্ণিঝড়কে আশীর্বাদ হিসেবেই দেখছেন বিজয়নগরামের মানুষ। আগামী কয়েকদিন সেখানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদী-নালা পানিতে ভরে উঠবে এবং ভূগর্ভে পানির চাহিদা কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিজয়নগরামের কালেক্টর এম.হ্যারি জহরলাল বলেন, আগামী কয়েকদিনে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে জেলার বিভিন্ন স্থানে খাবার পানির সংকট কমে যাবে।
তবে ঝড়ের কারণে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনাকেও যথেষ্ঠ গুরুত্বে সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা কোন ঝুঁকি নিতে চাই না। বিভিন্ন স্থানে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে এবং বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
বিজয়নগরামের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট এ আর দামোদার বলেন, ফণীর প্রভাবে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতিতে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানে সাড়া দিতে প্রস্তুত রয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনী, দমকল বাহিনী, পুলিশ, এনডিআরএফ, নৌবাহিনী এবং অন্যান্য বিভাগের লোকজন।