
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “রমজান মাস- এমন একটি মাস যে মাসে নাযিল করা হয়েছে আল-কুরআন। এই আল-কুরআন লোকদের ঠিক পথে চালায়, ঠিক পথের স্পষ্ট আলামত দেখায় এবং ন্যায়কে অন্যায় থেকে পৃথক করে দেয়। এখানে আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি রামাযান মাসে যে সওগাত পাঠান তা হচ্ছে আল-কুরআন। আল্লাহ তা‘আলা আদম সন্তানকে যত নে‘মত দান করেছেন তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নে‘মত হচ্ছে আল-কুরআন। কারণ আল্লাহর আর সব নে‘মাত মূলতঃ নশ্বর দেহের পুষ্টি সাধন করে অথবা নশ্বর দেহকে আরাম আয়েশ দান করে থাকে; কিন্তু আল-কুরআন নশ্বর দেহ পালনের যাবতীয় ব্যবস্থা দান করার সঙ্গে সঙ্গে অবিনশ্বর, চিরস্থায়ী রূহের সকল প্রকার কল্যাণের পথ উন্মুক্ত করে। কাজেই মানুষ যে মাসে এই অমূল্য সওগাত আল-কুরআন লাভ করেছে, মানুষের ইতিহাসে সেই মাসটি যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মহান তাতে কোনই সন্দেহ থাকতে পারে না। রমজান হলো আল্লাহর অসংখ্য নেয়ামতে ধন্য ও রহমত,বরকত ও মাগফিরাতের বাণীতে শিক্ত । আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,রোজা একজন রোজাদারকে তাকওয়ার বা খোদাভীরুতার পথে অগ্রসর করতে পারে যদি উক্ত রোজাদার রোজার হক আদায় করে রোজা পালন করতে পারে। মাহে রমজান আসলে আমরা আল্লাহর ইবাদতে বেশী করে মাশগুল থাকি এবং আল্লাহর ভয়ে সকল প্রকার গোনাহ থেকে আমরা যথাসাধ্য বিরত থাকি। আমাদের সর্বদা মনে রাখতে হবে রোজা আমাদের জন্য একটা মহা নেয়ামত। আর আল্লাহর দেয়া এই মহা নেয়ামতকে আমাদের অবশ্যই এই মাহে রমজানে কাজে লাগাতে হবে। বাইহাকি শরীফের একটি হাদিসে হযরত সালমান ফারসী (রা:) হতে বর্ণিত দীর্ঘ হাদিসের শেষ অংশে আল্লাহর রাসুল (স:) এরশাদ করেন, রমজান মাসে চারটি কাজ বেশী বেশী পরিমান করার জন্য আল্লাহর রাসুল নির্দেশ করেছেন্ সে চারটি কাজ হলো এক.সর্বশ্রেষ্ট জিকির কালেমায়ে তাইয়্যেবা বেশী বেশী পরিমান পাঠ করা। দুই.বেশী বেশী করে আসতাগফির করা বা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করা।তিন.আল্লাহর কাছে বেশী করে জান্নাত কামনা করা । চার. আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে নাজাতের জন্য বেশী বেশী করে ক্ষমা প্রার্থনা করা। জান্নাতটির দরজা হলো রাইয়্যন। যা শুধু রোজাদারদের জন্যই প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। রাসুলুলাহ (স:) এরশাদ করেন, রমজান মাসে আমার উম্মতের মর্যাদার জন্য আল্লাহ তায়ালা পাঁচটি জিনিস দান করেছেন,যা আর কোন রাসুলের উম্মতকে দান করা হয়নি আর তা হলো,রোজাদারের মুখের ঘ্রাণ আল্লাহর কাছে মিশকের বা মৃগনাভী থেকেও খুশবদার।রোজাদারদের জন্য সমুদ্রের মৎস সমুহ আল্লাহর কাছে ইফতারীর সময় পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে।প্রতিদিন আল্লাহ তায়ালা রোজাদারের জন্য জান্নাতকে সুশোভিত করতে থাকে এবং জান্নাতকে বলতে থাকে তোমার মধ্যে আমার এক নেক বান্দাহ খুব শীঘ্র আসছে।