
যশোরের ইছালী ইউনিয়ন এলাকায় সংঘবদ্ধ চিহ্নিত একটি মাদক সিন্ডিকেট দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা জমজমাট মাদক ব্যবসা করে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে। এলাকার উঠতি বয়সী যুবক, এমনকি স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্ররাও স্বর্বস্বান্ত হচ্ছে। চক্রটির কেউ কেউ চাঁদাবাজি ছিনতাইসহ নানা সন্ত্রাসী তৎপরতার সাথেও জড়িত বলে অভিযোগ।
ডজনখানেকের ওই সিন্ডিকেটের অধিকাংশই এখন স্থানীয় ফাঁড়ির দারোগা নাজমুল ইসলামের সাথে সখ্যতা রেখে চলেছে। মাদক ব্যবসায়ী চক্রের এক জনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে দেখা গেছে ওই দারোগাকে। স্থানীয় শান্তিপ্রিয় মানুষ দ্রুত মাদক ব্যবসায়ী চক্রকে আটক করার দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ যখন যশোরকে মাদকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে, তখন যশোরের ইছালী এলাকায় অপ্রতিরোধ্য স্টাইলে ইয়াবা, ফেনসিডিল গাঁজার রমরমা ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ আসছে। হাফ ডজন মাদক ব্যবসায়ী এখন প্রকাশ্যে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এনায়েতপুরের বহুলালোচিত মাদক কারবারী মহিদুল ইসলাম, মনোহরপুরের পারভেজ, তৌহিদুর রহমান, আশরাফুল ইসলাম, মথুরাপুরের ইদ্রিস আলী ওরফে মেম্বার ইদ্রিস, একই এলাকার রাসেলসহ ডজনখানেকের একটি চক্র মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এই সিন্ডিকেটের রমরমা ব্যবসাকে সমর্থন করছেন স্থানীয় ফাঁড়ির এএসআই নাজমুল হোসেন। চক্রের চিহ্নিত কয়েকজনের অপতৎপরতায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, ইছালী এলাকার কয়েকটি স্পটে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে মাদকের কারবার। চক্রটি স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশের নাকের ডগায় প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা কারবার। তারা গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ নানা ভার্সনের মাদকদ্রব্য বিক্রি করে চলেছে। তাদের অবাধ মাদক বিকিকিনির কারণে ছাত্র ও যুবসমাজ চরমভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। ছাত্রদের কেউ কেউ সেবনসহ এই ব্যবসায় জড়িয়ে তাদের পরিবারকে অতিষ্ঠ করে তুলছে।

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, মহিদুল-ইদ্রিস সিন্ডিকেট মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও চালিয়ে যাচ্ছে মাদক বিকিকিনি। ফোন করে মাদকের অর্ডার, আর বিকাশের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ এমনই কায়দায় চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। রাসেল নামে একজন ভদ্রবেশে থেকে মাদক ব্যবসায় পুঁজি বিনিয়োগ করে টাকা কামাচ্ছে। ওই রাসেলের বাড়িতে দাওয়াত খেতে গেছেন দারোগা নাজমুল। যে কারণে সে এলাকার ওই চক্রের অনেকটা নেতাও বনে গেছে!
সূত্র জানায়, বেনাপোলের কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে মাদকের চালান নিয়ে আসছে তারা। শার্শার রুদ্রপুর, কাশীপুর, গোগা, শিকারপুর, হরিশচন্দ্রপুর, বেনাপোলের পুটখালী, দৌলতপুর, গাতিপাড়া, সাদিপর, বড়আঁচড়া, রঘুনাথপুর ও চৌগাছা সীমান্ত দিয়ে যশোরে মাল আনছে এরা। এদিকে এ নিয়ে চরম উদ্বেগ, হতাশা আর উৎকন্ঠায় আছে এলাকার অনেক অভিভাবক। তারা বলছেন, এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের জন্য রোডে চলাচলে চরম অসুবিধা হচ্ছে। বাধা দিলে উল্টো হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ সমীর সরকার জানিয়েছেন, মাদক ব্যবসায়ীদের ছাড় নেই। অভিযুক্ত ওইসব চিহ্নিতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট তথ্য দিলেই তাদের দ্রুত আটক করা হবে। গোপন অভিযান চলছে।