
বিশ্বকাপে দশ দলের মধ্যে অষ্টম হয়ে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ। ব্যর্থ হলেও এ বিশ্বকাপ বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে অনেক কারণে। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রমাণ করে দিয়েছে, বিশ্ব ক্রিকেটের মহাসাগরে তারা আর চুনোপুঁটি নয়- এমনটাই জানিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইসিসি।
আইসিসি তাদের প্রতিবেদনে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের নানা দিক তুলে ধরেছে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে তারা লেখে, 'শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত না হলে বা নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নিতে পারলে ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভাগ্য অন্যরকম হতে পারতো। ভারত, অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও তারা লড়ে হেরেছে ঠিকই, কিন্তু প্রথম সারির দলগুলোর সঙ্গে তাদের ব্যবধান বেশ বোঝা গেছে।'
এছড়া আইসিসি এ বিশ্বকাপকে সাকিবের বিশ্বকাপ বলে উল্লেখ করেছে। সাকিব সম্পর্কে তারা লেখে, 'গত এক দশক ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট মানেই সাকিব আল হাসান। এই বিশ্বকাপ প্রকৃত অর্থেই সাকিবের বিশ্বকাপ। ঈর্ষণীয় ধারাবাহিকতার পরিচয় দিয়ে আটটা ম্যাচের সাতটায় তিনি পঞ্চাশের ওপর রান করেছেন। তাঁর সর্বনিম্ন স্কোর ৪১। বল হাতেও কম সফল নন, আটটা ম্যাচে পেয়েছেন ১১টা উইকেট। গুরুত্বপূর্ণ সব উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের দিকে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছেন একাধিকবার। বিশ্বের এক নাম্বার অলরাউন্ডার সাকিব নিঃসন্দেহে ২০১৯ বিশ্বকাপের প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট খেতাবের একজন জোরালো দাবিদার।'
বাংলাদেশের অনান্য ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করা হয় প্রতিবেদনে। মুশফফিক, সাইফউদ্দিনদেরও প্রশংসায় ভাসানো হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, 'তবে বাংলাদেশ এবার পুরোপুরি সাকিব-নির্ভর ছিল বললে অন্যায় হবে। উইকেটকীপার মুশফিকুর রহিমও ৫০ এর ওপর গড়ে ধারাবাহিকভাবে রান পেয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে লিটন দাসের অপরাজিত ৯৪ ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে দীর্ঘদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
আইসিসি মুস্তাফিজকে বিশ্বকাপের চমক উল্লেখ করেছে। তারা টানা দুইবার পাঁচ উইকেট শিকারকে উল্লেখ করে তারা লেখে, 'তবে এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আসল চমক বোধহয় পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। দু-দু'বার পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন টুর্নামেন্টে। মোট উইকেটের সংখ্যা কুড়ি। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন তাঁকে যথার্থ সঙ্গ দিয়ে গেছেন এবং পুরস্কারস্বরূপ পেয়েছেন ১৩টি উইকেট। মেহেদী হাসান প্রায় প্রতি ম্যাচে বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের রান নেওয়ার চেষ্টায় জল ঢেলেছেন। সবথেকে বড় কথা মোস্তাফিজুরের বয়সে মাত্র তেইশ, আর বাকিদের আরও কম। ২০১৯ বিশ্বকাপে আগামীদিনের বোলারদের পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। '
আইসিসি বাংলাদেশের দর্শকদের প্রশংসা করতেও ভোলেন। দর্কদের উপস্থিতি ও সমর্থন নিয়ে প্রতিবেদনে তারা লেখে, 'আর সবশেষে বাংলাদেশের ফ্যানদের কথা আলাদা করে না বললেই নয়। গোটা টুর্নামেন্টে স্টেডিয়ামের ভেতরে এবং বাইরে দলকে যেভাবে অবিরাম উৎসাহ জুগিয়ে গেছেন, তা চোখে পড়ার মত।'