gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৪ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
চেক জালিয়াতি করে আত্মসাৎ করলেন ৩৬ লাখ টাকা!
প্রকাশ : সোমবার, ১ মার্চ , ২০২১, ০৩:৩১:৫০ পিএম
কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা ::
1614591958.jpg
তিনি অফিসের হিসাবরক্ষক। ব্যাংকের চেকসহ সব কাগজপত্র থাকে তার কাছে। প্রয়োজনে অফিসের বড় কর্তার কাছ থেকে চেকে স্বাক্ষর নেন। এই সুযোগে দুর্নীতি আর প্রতারণার মাধ্যমে অফিসের ৩৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন চতুর কেরানি মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজ।তিনি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবরক্ষক। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম আর চেক জালিয়াতি করে ১০৬টি চেকের মাধ্যমে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।জানা গেছে, ২০১৭-২১ সাল পর্যন্ত পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করেছেন তিনি।জানা গেছে, সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে মহাপরিচালক বরাবর ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে চেক জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উত্থাপিত হয়। পরে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।এ ছাড়া চেক জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের এমন ঘটনায় ওই তিন বছর কটিয়াদি উপজেলায় পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা আরো চারজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ে হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি অফিস আদেশের মাধ্যমে বোর্ডের একজন যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সরেজমিন তদন্তপূর্বক একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।সূত্র জানিয়েছে, বিআরডিবির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে আদায়কৃত ঋণের টাকা কটিয়াদী উপজেলার অগ্রণী, কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে জমা রাখা হতো। হিসাবরক্ষক ফেরদৌস দীর্ঘদিন ধরে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে সেই টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। পরে জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসলে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া চেক বই বাতিলের জন্য কটিয়াদি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়।তবে চেক জালিয়াতি ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজ। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, বিভিন্ন সময় খরচ দেখিয়ে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তারা চেকে আমার সই নিয়ে টাকা উত্তোলন করেছেন। অফিসের প্রধান কর্মকর্তা ও আমার যৌথ স্বাক্ষরেই টাকা উঠানো হয়। তবে উনারা কীভাবে সেই টাকা খরচ করেছেন সে হিসাবও আমি জানি না।বিআরডিবি ঢাকার যুগ্ম পরিচালক এবং তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান জানান, যেহেতু অভিযোগের সঙ্গে যাবতীয় বিল-ভাউচার, ব্যাংকের স্টেটমেন্ট ও চেকের বিভিন্ন বিষয় জড়িত সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। আপাতত অভিযুক্তকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।কিশোরগঞ্জ বিআরডিবির উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বাংলা জানান, প্রথমে এক লাখ ২০ হাজার টাকার চেক জালিয়াতির অভিযোগ পাই। পরে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আরো দুর্নীতি বা অনিয়ম যাচাই করতে মহাপরিচালক বরাবর একটি চিঠি পাঠাই। এরপর সেখান থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি পাঠিয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে মামলাসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।কটিয়াদি উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র দাস জানান, অভিযোগটি মহাপরিচালক বরাবর যাওয়ার পর আমাকেও শোকজ করা হয়েছে। তবে আমি কর্তৃপক্ষের কাছে জবাব দিয়েছি। তিনিসহ আরো চারজন কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করেছে হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজ।

আরও খবর

🔝