gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
লোকসান হবে ১৬ কোটি টাকা

❒ যশোরে ২৫ হাজার মেট্রিকটন আলু নিয়ে বিপাকে চাষি-ব্যবসায়ী

প্রকাশ : শুক্রবার, ২৪ সেপ্টেম্বর , ২০২১, ০৯:৫১:৫৫ পিএম
এম. আইউব:
1632499071.jpg
যশোরে ২৫ হাজার মেট্রিকটন আলু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন হিমাগারে সংরক্ষণকারী চাষি-ব্যবসায়ীরা। দাম আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় ১৬ কোটি ২০ লাখ নয় হাজার পাঁচশ’ টাকা লোকসান হচ্ছে তাদের। ক্ষুদ্র চাষি আর ব্যবসায়ীদের পুঁজি হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হচ্ছে। এ অবস্থায় হিমাগার পর্যায়ে ১৮-১৯ টাকা দর বেধে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী চাষি-ব্যবসায়ীরা। এটি করলে অন্তত পুঁজি বাঁচবে। তা না হলে তাদের দেউলিয়া হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। এ বছর যশোরের ১০ টি হিমাগারে ৪০ হাজার ৮২ মেট্রিকটন আলু সংরক্ষণ করা হয় বলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের যশোর অফিস থেকে জানানো হয়েছে। এরমধ্যে রাজারহাটের এআরএ কোল্ডস্টোরে দুই হাজার পাঁচশ’ মেট্রিকটন, টাওয়ার কোল্ডস্টোরে চার হাজার পাঁচশ’ ৫০ মেট্রিকটন, মালঞ্চির সেনাকল্যাণ কোল্ডস্টোরে চার হাজার মেট্রিকটন, ঝিকরগাছার গদখালির রজনীগন্ধ্যা কোল্ডস্টোরে আট হাজার পাঁচশ’ ৮০ মেট্রিকটন, বাঘারপাড়ার গাইদঘাটের সরদার কোল্ডস্টোরে ছয় হাজার মেট্রিকটন, চুড়ামনকাটির আলী কোল্ডস্টোরে এক হাজার ছয়শ’ ৪০ মেট্রিকটন, চৌগাছার ডিভাইন কোল্ডস্টোরে ছয় হাজার তিনশ’ ৮০ মেট্রিকটন, বিএডিসি হিমাগারে এক হাজার মেট্রিকটন, নাভারণের সুন্দরবন কোল্ডস্টোরে এক হাজার ছয়শ’ ৫০ মেট্রিকটন এবং চৌগাছার ডিভাইন অ্যাগ্রো টিস্যু কালচার হিমাগারে তিন হাজার আটশ’ মেট্রিকটন আলু সংরক্ষণ করা হয়। যদিও টিস্যু কালচার হিমাগারের আলু বীজ হিসেবে বিক্রি করা হবে। এ পর্যন্ত মাত্র ১০ হাজার নয়শ’ ৪৯ মেট্রিকটন আলু বিক্রি হয়েছে। এখনো পর্যন্ত দশটি হিমাগারে পড়ে রয়েছে ২৯ হাজার একশ’ ৩৩ মেট্রিকটন। হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছেন, এবছর প্রতিকেজি আলু সংরক্ষণ করতে চাষি এবং ব্যবসায়ীদের কমপক্ষে ১৮ টাকা খরচ হয়েছে। অথচ হিমাগার থেকে বিক্রি হচ্ছে ১২.২৫ থেকে ১২.৫০ টাকায়। প্রতি কেজি আলুতে সংরক্ষণকারীদের লোকসান হচ্ছে সাড়ে পাঁচ টাকা। সেই হিসেবে মোট লোকসান হবে ১৬ কোটি ২০ লাখ নয় হাজার পাঁচশ’ টাকা। যশোরের সবচেয়ে বড় কোল্ডস্টোর রজনীগন্ধ্যার ম্যানেজার কাজী সাজেদুর রহমান শামীম জানান, গত বছর যেখানে প্রতিদিন ১৫-১৬শ’ বস্তা আলু বের হতো এবার সেখানে সাড়ে তিন থেকে চারশ’ বস্তার বেশি আলু যাচ্ছে না। এখনো পর্যন্ত রজনীগন্ধ্যা হিমাগারে এক লাখ ছয় হাজার বস্তা আলু সংরক্ষিত রয়েছে বলে জানান শামীম। তিনি বলেন, এবার আলুতে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন সংরক্ষণকারীরা। কমপক্ষে ১৮ টাকায় বিক্রি করতে পারলে তাদের পুঁজি বাঁচবে। তা না হলে অনেকেই পথে বসবে। পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় হিমাগার পর্যায়ে আলুর দাম বেধে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন সংরক্ষণকারীরা। সারাদেশে হিমাগার পর্যায়ে ১৮-১৯ টাকা দাম বেধে দিলে একদিকে চাষি-ব্যবসায়ীদের পুঁজি রক্ষা পাবে, অন্যদিকে ভোক্তা পর্যায়েও দাম সাধ্যের মধ্যে থাকবে। যদি দাম বেধে দেয়া না হয় তাহলে এই শিল্প ধ্বংসের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই। এদিকে, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানিয়েছে, যশোরের বাজারে আলু খুচরা ১৫-১৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে সাড়ে ১২ টাকায়। এ বিষয়ে যশোর জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান বলেন, ‘হিমাগার পর্যায়ে আলুর দাম বেধে দেয়ার বিকল্প নেই। তবে, এটি করতে হবে জাতীয়ভাবে। সারাদেশে একযোগে এই দাম নির্ধারণ করতে হবে। তাহলে কৃষক ও সংরক্ষণকারী ব্যবসায়ী বাঁচবে। এটি করতে না পারলে অনেকে নিঃস্ব হয়ে পড়বে। আর দাম নির্ধারণ করতে হবে আগামী এক মাসের মধ্যে। কারণ নভেম্বরের শেষ কিংবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নতুন আলু উঠবে। তার আগে হিমাগার খালি করতে হবে সংরক্ষণকারীদের।’

আরও খবর

🔝