gramerkagoj
শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৭ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
নওগাঁয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম জমিতে গমের আবাদ
প্রকাশ : বুধবার, ১৬ মার্চ , ২০২২, ০৪:৫১:২৫ পিএম
নওগাঁ প্রতিনিধি::
1647427912.jpg
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয় দিন দিন কমছে গম চাষ। জেলায় গম চাষে প্রান্তিক কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি করতে সরকার থেকে দেওয়া হয়েছে প্রণোদনা। তবুও কমে আসছে গমচাষী কৃষকের সংখ্যা।  জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে জেলায় মোট ২০ হাজার ৩শ ৭৫ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ হাজার ৭শ ১০ হেক্টর। শুরুতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৯ হাজার ৯শ ৩৯ মেট্রিক টন। আর এখন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭১ হাজার ৭শ ১০মেট্রিক টন।গত মৌসুমে জেলায় গমের আবাদ হয়েছিল ২২ হাজার ৬শ ১০ হেক্টর জমিতে, লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ হাজার ৪শ হেক্টর।চলতি মৌসুমে নওগাঁ সদর উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর, রানীনগর উপজেলায় ৫৩০ হেক্টর, আত্রাই উপজেলায় ৩৯৫ হেক্টর, বদলগাছি উপজেলায় ৯০০, মহাদেবপুর উপজেলায় ৪২০ হেক্টর, পত্নীতলা উপজেলায় ১ হাজার ৭৬০ হেক্টর, ধামইরহাট উপজেলায় ১ হাজার ৩৯৫ হেক্টর, সাপাহার উপজেলায় ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর, পোরশা উপজেলায় ৪ হাজার ২৭৫ হেক্টর, মান্দা উপজেলায় ৪ হাজার ৫৫০ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় ৩ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে।কৃষি অফিস ও কৃষকদের ভাষ্য মতে, গমের আবাদ কমে যাওয়ার কারণ হচ্ছে অন্য আবাদে ভালো লাভ হওয়ার করণে দিন দিন গমের আবাদ কমে আসছে। গমে ফসল করতে পরিশ্রম এবং সময় মিলিয়ে কৃষকের তেমন ভালো কিছু হয় না। তাই দিন দিন কৃষক গম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।গম চাষে উৎসাহিত করতে সরকারিভাবে জেলার ১০ হাজার প্রান্তিক কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এসব কৃষকের প্রত্যেককে ১ বিঘা জমির অনুকূলে ২০ কেজি করে বীজ, ২০ কেজি করে ডিএপি সার ও ১০ কেজি করে এমওপি সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। সেই হিসেবে জেলায় মোট ২ লাখ কেজি বীজ, ২ লাখ কেজি ডিএপি সার এবং ১ লাখ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে।বদলগাছী উপজেলার হলুদ বিহার গ্রামের গমচাষী মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আমি এক বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছি আর এখন পর্যন্ত মাশাল্লাহ ভালো হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সরকারি প্রণোদনা ও সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি। গত বছরও আমি গম চাষ করেছি এবং ভালো লাভ ও পেয়েছি। কিন্তু সমস্যা হলো কাটা মারাইয়ের জন্য মানুষ পাওয়া খুব কষ্টসাধ্য।দৌলতপুর গ্রামের আরও এক কৃষক মো. আইয়ুব হাসান বলেন, বাড়িতে রুটি খাবার জন্য গমের আবাদ করেছি। গমের ফসল করতে খরচ আর সময় বেশি লাগে। আগে যে জমি গুলোতে গম চাষ হতো সেখানে এবছর এখন সরিষা আবাদ হয়েছে।গম চাষে বিঘাপ্রতি বীজ, সার, কীটনাশক, হাল চাষ, সেচ, শ্রমিক ও কাটা-মাড়াই সব দিয়ে প্রায় ৬-৭ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করবো। তখন খরচ কিছুটা কম পড়বে। যদি সরকার থেকে প্রণোদনা পেতাম খরচ অনেকটা বেচে যেত। দেড় বিঘা জমিতে আম বাগান আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এলাকায় গমের আবাদ কমেছে। গমের পরিবর্তে এখন সরিষার আবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া আম বাগানও গড়ে উঠছে।নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামছুল ওয়াদুদ বলেন, গমের আবাদ কমে চাষিরা আম বাগান ও সরিষা চাষের দিকে যাচ্ছে। গমের তুলনায় আম ও সরিষায় লাভ বেশি। তার ফলে এখন কৃষকরা সেদিকেই ঝুঁকছে।তা ছাড়া গমের চেয়ে সরিষা আবাদে সময় কম লাগে। সরিষা তুলে ওই জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ হচ্ছে। আবার সরিষা ও তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় চাষিরা সরিষা আবাদের দিকেও ঝুঁকছে।তিনি আরও বলেন, গমের আবাদে দু-তিনটা সেচ দিতে হয়। মাড়াই করতে গিয়েও সমস্যা হয় কৃষকদের। তারপরও কৃষকদের প্রণোদনার মাধ্যমে গম চাষে আগ্রহ বাড়ানো হচ্ছে বলে তিনি বলেন। 

আরও খবর

🔝