gramerkagoj
শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ সারাদেশে উৎসব, উদযাপিত হবে শিশু দিবস

টুঙ্গিপাড়ার রাখাল রাজার জন্মদিন
প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ , ২০২২, ০১:০৩:৪৭ এ এম
আসাদ আসাদুজ্জামান:
1647457464.jpg
আজ এক মহা উৎসবের দিন। যাঁর জন্ম না হলে হয়তোবা বাংলাদেশ কখনো স্বাধীন হতো না, সেই অকুতোভয় নেতা টুঙ্গিপাড়ার রাখাল রাজা স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন আজ। শুধু জন্মদিন বললে কিছুটা বাকী থেকে যায়। আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর সমাপনী উৎসব। আজ জাতীয় শিশু দিবসও। করোনায় বাধাগ্রস্ত হলেও দু’বছর আগে যে উৎসবের ঘোষণা এসেছিলো, আজ তার সমাপনী দিন। এ উপলক্ষে জাতীয় পর্যায় থেকেসহ গোটা দেশে উৎসবের আমেজ। ১৬ কোটি মানুষের হৃদয়ের শ্রদ্ধাঞ্জলি আজ জাতির পিতার প্রতি। থাকছে হাজারো উৎসব আয়োজন। বাংলা ও বাঙালির কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নামটি মহাকালের আবর্তে হারিয়ে যাওয়ার নয়। কারণ, বঙ্গবন্ধু মানেই যেনো বাংলাদেশ। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বাঙালির জন্য আশীর্বাদ ও আনন্দের দিন। এদিন হাজার বছরের শৃঙ্খলিত বাঙালির মুক্তির দিশা হয়ে জন্ম নিয়েছিল মুজিব নামের এক দীপ্তমান আলোক শিখা। এ আলোক শিখা ক্রমে ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র, নিকষ কালো অন্ধকারের মধ্যে পরাধীনতার আগল থেকে মুক্ত করতে পথ দেখাতে থাকে পরাধীন জাতিকে। অবশেষে বাংলার পুব আকাশে পরিপূর্ণ এক সূর্য হিসেবে আবির্ভূত হয়, বাঙালি অর্জন করে মুক্তি। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু আজ নেই, কিন্তু সে সূর্যের প্রখরতা আগের চেয়েও বেড়েছে অনেকগুণ। তাঁর অবস্থান এখন মধ্যগগণে। সেই সূর্যের প্রখরতা নিয়েই বাঙালি জাতি আজ এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে।যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবেই উদযাপন করা হচ্ছে। প্রগতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীসহ জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, কূপমন্ডুকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ লড়াইয়ের দুর্জয় প্রেরণা, ইস্পাতকঠিন প্রত্যয় আর সকল ষড়যন্ত্রের কুহেলিকা ভেদ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ বিনির্মাণের দৃপ্ত শপথ নিয়ে বাঙালি আজ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বাংলা, বাঙালি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একবৃন্তে তিনটি চেতনার ফুল। বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের মাঝে বঙ্গবন্ধু চির অম্লান, চিরঞ্জীব। তদ্রুƒপ বাংলার শোষিত-বঞ্চিত-নির্যাতিত-মেহনতি জনতার হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন।১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের অজ-পাড়াগাঁ মধুমতি আর বাঘিয়ার নদীর তীরে এবং হাওড়-বাঁওড়ের মিলনে গড়ে ওঠা বাংলার অবারিত গ্রাম টুঙ্গিপাড়ায় শেখ পরিবারে জন্ম নেয়া খোকা নামের শিশুটি কালের আবর্তে হয়ে উঠেছিলেন নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালীর ত্রাণকর্তা ও মুক্তির দিশারি। গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ এবং জনগণের প্রতি মমত্ববোধের কারণে পরিণত বয়সে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামবহুল জীবনের অধিকারী এই নেতা বিশ্ব ইতিহাসে ঠাঁই করে নিয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।একাত্তরের এই দিনে জনৈক এক বিদেশী সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে জানতে চান, আজ ৫২তম জন্মদিনে আপনার সবচেয়ে বড় কামনা কী? জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, জনগণের সার্বিক মুক্তি। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি জন্মদিন পালন করি না। আমার জন্মদিনে মোমবাতি জ্বালাই না, কেকও কাটি না। বঙ্গবন্ধু আরও বলেন, আমি জনগণেরই একজন। আমার জন্মদিনই কী, আর মৃত্যুদিনই কী! আমার জনগণের জন্যই আমার জীবন ও মৃত্যু। আপনারা জনগণের অবস্থা জানেন। অন্যের খেয়ালে যে কোন মুহূর্তে তাদের মৃত্যু হতে পারে।২০০ বছরের পরাধীনতার জিঞ্জির ছিঁড়ে এই বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বেই ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাকামী বাঙালীর দীর্ঘ নয় মাস মৃত্যুপণ জনযুদ্ধের অনিবার্য পরিণতি হিসেবে অর্জিত হয়েছিল মহামূল্যবান স্বাধীনতা। আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি উদযাপন করা হবে। যশোরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ হাজারও সংগঠন, জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন বিদ্যাপীঠসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রক্ষে আজ জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবে এবং দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করবে।

আরও খবর

🔝