gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ৯ মে ২০২৪ ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
রাঙামাটিতে বীর শহিদদের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন
প্রকাশ : বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারি , ২০২৪, ০২:০৭:০০ পিএম
মোস্তফা কামাল, রাঙামাটি প্রতিনিধি:
GK_2024-02-21_65d5a3b400296.jpg

রাঙামাটিতে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বিভিন্ন ভাষাভাষির মানুষ। একুশের প্রথম প্রহরে রাঙামাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান এবং পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বিপিএম (বার)।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, সহকারী পুলিশ সুপার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তারা ভাষা শহীদদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করেন সবাই। প্রশাসনের শ্রদ্ধা নিবেদনের পরপরই জাতীয় সংসদের সংরক্ষতি নারী আসনের সংসদ সদস্য জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে একে একে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাঙামাটির বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবি, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ছাত্র ও যুব ইউনিয়নসহ স্থানীয় রাজনৈতিক দলসমূহের রাঙামাটি শাখার নেতারা দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সকালে প্রভাতফেরি সহকারে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন রাঙামাটির বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা রাঙামাটি শিশু নিকেতনের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী অনুরা দে বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে আমি আমার স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে শহীদ মিনারে ফুল দিতে এসেছি। যাদের জন্য আমরা আমাদের মাতৃভাষা পেয়েছি তাদের আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জয়ন্তী ত্রিপুরা বলেন, একুশ আমাদের অহংকার। সেই অহংকারকে সঙ্গে নিয়েই বাংলাভাষাকে পৃথিবীর সবদিকে ছড়িয়ে দিতে পারলেই ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ স্বার্থক হবে। পুষ্পস্তবক নিবেদন শেষে তারা শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে নীরবতা পালন করেন।
মাতৃভাষার অপপ্রয়োগ বিষয়ে আবৃত্তি সংগঠন আফ্রোদিতির সদস্য সাইফুল বিন হাসান বলেন, বর্তমানে আমরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলার সর্বোচ্চ অপব্যবহার করছি। কেউই বাংলাটাকে শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করি না। ভাষার এই বিকৃত ব্যবহার আমাদের জন্য লজ্জাজনক। সন্তানদের শুদ্ধ ভাষাচর্চায় অভ্যস্ত করে তোলার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান এই আবৃত্তিশিল্পী।
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে রয়েছে বাঙালিসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী জাতিসত্তার বসবাস। চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, পাংখোয়া, খুকি, মুরং সহ মোট ১২টি ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর জনপদ এই পার্বত্য রাঙামাটি। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনে এসেছিলেন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর সংগঠনগুলোও। সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলেন, আমাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি থাকলেও বাংলা আমাদের প্রাণের ভাষা। পৃথিবীতে বাঙালিরাই একমাত্র জাতি যারা মাতৃভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছে। আমরা তাদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।
শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসা ক্রশনুন পুইয়া পাংখোয়া বলেন, আমরা বাংলা ভাষার জন্য গর্ববোধ করি। পাশাপাশি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের নিজস্ব ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তিনি সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি রাঙামাটির স্থানীয় আবৃত্তি শিল্পীদের পরিবেশনায় চলতে থাকে একুশের কবিতা আবৃত্তি।

আরও খবর

🔝