gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
একাত্তরের উত্তাল মার্চ
প্রকাশ : শুক্রবার, ১৫ মার্চ , ২০২৪, ১২:০১:০০ এ এম , আপডেট : বুধবার, ২০ মার্চ , ২০২৪, ০২:৪৬:২৯ পিএম
কাগজ সংবাদ:
GK_2024-03-20_65faa2659109f.jpg

১৫ মার্চ, ১৯৭১। একাত্তরের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের বৈঠক হয়। বৈঠকে বঙ্গবন্ধু সামরিক আইন প্রত্যাহার, বাঙালির ওপর গুলিবর্ষণ ও হত্যাকান্ড বন্ধসহ বিভিন্ন নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে এর জোরালো প্রতিবাদ জানিয়ে বিচার দাবি করেন।
ধানমন্ডির বাসভবন থেকে বেলা পৌনে ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি ভবনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় বিপুলসংখ্যক মানুষ জাতীয় নেতাকে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ সেøাগান দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। বঙ্গবন্ধুও এ সময় তাঁর কর্মী, সমর্থক ও ভক্তদের প্রতি ‘জয় বাংলা’ বলে গাড়িতে ওঠেন। এ সময় অপেক্ষমাণ বিদেশী সাংবাদিকদেরও জয় বাংলা বলে বঙ্গবন্ধুকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায়। তবে বাঙালি হত্যার প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে গাড়িতে কালো পতাকা উড়িয়ে বঙ্গবন্ধু অংশ নেন ইয়হিয়া খানের সঙ্গে বৈঠকে। বেলা ১১টার আগে আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান সাদা মোটরগাড়িতে করে প্রেসিডেন্ট ভবনে (বর্তমানে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন সুগন্ধা) গেলে পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানান।
বঙ্গবন্ধু কালো পতাকা উড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ভবনে পৌঁছুলে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বাঙালি জাতির এই নেতাকে স্বাগত জানিয়ে আলোচনার কক্ষে নিয়ে যান। বেলা ১১টায় রুদ্ধদ্বার কক্ষে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও সংসদীয় ক্ষমতার অধিকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে শুরু হয় একান্ত আলোচনা। বৈঠক চলে আড়াই ঘণ্টা ধরে। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া তার বাসভবনের বারান্দার সিঁড়ি পর্যন্ত এসে বঙ্গবন্ধুকে বিদায় জানান।
বঙ্গবন্ধু প্রেসিডেন্ট ভবনের প্রধান ফটকে পৌঁছলে সেখানে উপস্থিত দেশী-বিদেশী সাংবাদিক ও আলোকচিত্রিরা তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরেন। বঙ্গবন্ধু স্বেচ্ছায় গাড়ি থেকে সাংবাদিকদের জানান, ‘আমি রাজনৈতিক ও অন্যান্য সমস্যা সম্পর্কে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আরও অলোচনা হবে। এটি দু’এক মিনিটের ব্যাপার নয়। এজন্য সময়ের দরকার। আলোচনা চলবে। কাল সকালে আমরা আবার বসছি। এরচেয়ে বেশি আমার বলার নেই।’
প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে সরাসরি ধানমন্ডির বাসভবনে ফিরে বঙ্গবন্ধু দলের শীর্ষস্থানীয় সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। গভীর রাত পর্যন্ত এ বৈঠক চলে। দু’দফা সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার ফাঁকে বিকেলে বঙ্গবন্ধু তাঁর বাসভবনে কনভেনশন মুসলিম লীগ প্রধান ফজলুল কাদের চৌধুরীকে সাক্ষাত দেন।
বঙ্গবন্ধু-ইয়াহিয়া বৈঠক চলছে, অন্যদিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে আন্দোলন-সংগ্রামে পুরো পূর্ব পাকিস্তান কার্যত অচল হয়ে পড়ে। পহেলা মার্চ থেকেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণ হারায় বাংলাদেশের। সামরিক জান্তাদের কোন আদেশ-নির্দেশই মানছে না বীর বাঙালিরা। একমাত্র সেনা ছাউনি ছাড়া পাকিস্তানের অস্তিত্বই ছিল না কোন জায়গায়। বরং পুরো বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায়, শহর-বন্দরে পতপত করে উড়ছে বাংলাদেশের রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা।

আরও খবর

🔝