বাংলাদেশকে সিলেট টেস্টে জিততে হলে বিশ্বরেকর্ড পেছনে ফেললেই হবে না, করতে হবে আরও ৯৩ রান বেশি। টেস্ট ক্রিকেটে রান তাড়ার বিশ্বরেকর্ড ৪১৮ রানের। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই রান তাড়া করে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শ্রীলঙ্কা ৫১১ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে স্বাগতিকদের সামনে।
বড় ব্যবধানে পরাজয়ের শঙ্কায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেটে ৪৭ রান নিয়ে তৃতীয় দিন দিন শেষ করেছে নাজমুল হোসেন শান্তরা। জিততে হলে করতে হবে আরও ৪৬৪ রান।
রান তাড়ায় নেমে নয় রানের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়কের দেখানো পথ ধরেই জাকির হাসান, শাহাদাত হোসেন দিপুরা দ্রুতই ফিরেছেন।
জাকির আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলছিলেন, তবে সেই আত্মবিশ্বাসী ইনিংসটা থেমেছে ১৯ রানেই। লাহিরুর কুমারার বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জাকির। শাহাদাত হোসেন দিপুও সুইংয়ে বিভ্রান্ত। বিশ্ব ফার্নান্ডের বলে ব্যাট ছুঁইয়ে দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন শূন্য করেই।
পরের বলেই লিটন দাস যেভাবে খেললেন, চোখ কপালে ওঠার মতো। দলের বিপর্যয়ে হাল ধরবেন কি, ডাউন দ্য উইকেটে ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন লিটন। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে, বল সোজা উঠে যায় আকাশে। সহজ ক্যাচ নেন ম্যাথিউস। গোল্ডেন ডাক লিটনের। ৩৭ রানে পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ইনিংসে ১১০ ওভার চার বলে ৪১৮ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। একই টেস্টে দুই ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরির রেকর্ড উপহার দিয়েছেন লঙ্কার ব্যাটার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা এবং কামিন্দু মেন্ডিস। প্রথম ইনিংসেও সেঞ্চুরি করেছিলেন তারা।
একইভাবে দ্বিতীয় ইনিংসেও জোড়া সেঞ্চুরি উপহার দিলেন এই দু’ব্যাটারই। ১০৮ রানে করে আউট হন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। তবে কামিন্দু মেন্ডিস শেষ পর্যন্ত খেলে গেছেন। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে ১৬৪ রানের বড় ইনিংস খেলে দেন কামিন্দু। ২৩৭ বল মোকাবেলায় গড়া এই ইনিংসে ১৬টি চারের সঙ্গে ছয়টি ছক্কা হাঁকান এই ব্যাটার।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৪ রানে চারটি উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দু’টি করে উইকেট নাহিদ রানা আর তাইজুল ইসলামের।
শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও একই চিত্রনাট্য। ১২৬ রানে ছয় উইকেট পড়ার পর একইভাবে জুটি গড়ে দাঁড়িয়ে যান ধনঞ্জয়া ডি সিলভা আর কামিন্দু মেন্ডিস।১৭৩ রানের অনবদ্য জুটি গড়ার পর অবশেষে বিচ্ছিন্ন হন ডি সিলভা-মেন্ডিস জুটি।
১৭৯ বলে ১০৮ রান করা লঙ্কান অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভার উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। জাকির হাসানের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। শ্রীলঙ্কার দলীয় রান এ সময় ২৯৯। এরপর কামিন্দুর দেড়শোর্ধ্ব ইনিংসে লিড ৫০০ ছাড়ায়।
অথচ ৯২ রানের লিড নিয়ে ব্যাট করতে নামার পর দ্বিতীয় দিন শেষ বিকেলেই লঙ্কানদের পাঁচটি উইকেট তুলে নিয়েছিলো বাংলাদেশের বোলাররা। দিন শেষে করেছিলো তারা পাঁচ উইকেটে ১১৯ রান নিয়ে।