gramerkagoj
শুক্রবার ● ৩ মে ২০২৪ ২০ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
মহম্মদপুরে ৪০ দিনের কর্মসূচির মজুরির দাবিতে ইজিপিপি শ্রমিকদের বিক্ষোভ
প্রকাশ : শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:৩৭:০০ পিএম
এস আর এ হান্নান, মহম্মদপুর (মাগুরা):
GK_2024-04-20_6623efcaa4df2.jpg

‘ঈদ গেলো, বৈশাখ গেলো, আমাদের ঘরে আনন্দ নেই। টাকার অভাবে বউ-বাচ্চাদেরকে নতুন কাপড় চোপড় দিতে পারিনি। ঈদের আগে টাকা পেয়ে পরিবারের সবাই আনন্দ করবো, তা আর হলো না।’ তীব্র ক্ষোভের সাথে কথাগুলো বলেন পান্নু শেখ নামে একজন শ্রমিক। তিনি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের জাঙ্গালিয়া গ্রামের হাতেম শেখের ছেলে।
পান্নু শেখ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ণ অধিদপ্তরের আওতায় অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসূচির (ইজিপিপি) একজন শ্রমিক। শুধু পান্নু শেখই নন, উপজেলার লাহুড়িয়াপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ শেখের ছেলে চান মিয়া, জাঙ্গালিয়া গ্রামের সিদ্দিক শেখের স্ত্রী সুফিয়া, রায়পুর গ্রামের আক্তাব শিকদারের ছেলে রজমান আলী এবং ধুপুড়িয়া গ্রামের মমিন বিশ^াসের স্ত্রী আলেয়া বেগমের বক্তব্যও এক।
এই কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৪৩টি প্রকল্পে দুই হাজার ৬৬১ জন শ্রমিক ৪০ দিন কাজ করেছেন। এ কাজ শুরু হয় গত বছরের ১১ নভেম্বর এবং শেষ হয় চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি। কাজ শেষ হওয়ার পর দীর্ঘ তিনমাস অতিবাহিত হলেও প্রকেল্পর শ্রমিকেরা তাদের মজুরি পাননি। মজুরির দাবিতে তারা প্রায়ই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধর্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা মজুরির দাবিতে উপজেলা পরিষদের ভেতরে বিক্ষোভ করেন।
ভূক্তভোগী শ্রমিকেরা জানান, কর্মসূচির কাজ শেষ হয়েছে তিনমাস আগে। কিন্তু আজও পাওনা টাকা পাওয়া যায়নি। মজুরি না পেয়ে ঈদ ও পহেলা বৈশাখের আনন্দ বোঝেনি কোনো শ্রমিক। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানায়, উপজেলায় ৪৩টি প্রকল্পে দুই হাজার ৬৬১ জন উপকারভোগী শ্রমিক কাজ করেছেন। যার মধ্যে মহম্মদপুর সদর ইউনিয়নে ৫টি প্রকল্পে ৩১৭ জন, রাজাপুরে ৪টি প্রকল্পে ২৫১ জন, বালিদিয়ায় ৬টি প্রকল্পে ৩৫৬ জন, দীঘায় ৪টি প্রকল্পে ২৫৯ জন, বিনোদপুরে ৬টি প্রকল্পে ৫৬৫ জন, নহাটায় ৬টি প্রকল্পে ৩৮৪ জন, পলাশবাড়ীয়ায় ৬টি প্রকল্পে ৩৬৯ জন এবং বাবুখালী ইউনিয়নে ৬টি প্রকল্পে ৩৬০ জন শ্রমিক কাজ করেছেন। দিনে ৪০০ টাকা হারে মজুরির হিসেব অনুযায়ী ৪০ দিনে প্রতিজন শ্রমিকের পাওনা ১৬ হাজার টাকা। ওই হিসেব অনুযায়ী দুই হাজার ৬৬১ জন শ্রমিকের মোট পাওনা টাকার পরিমাণ চার কোটি ২৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মমিনুর ইসলাম বলেন, ‘গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভুল করে শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিং নগদ একাউন্টে অতিরিক্ত বিপুল পরিমাণ টাকা ঢুকে যায়। সেখান থেকে টাকা আদায় শেষে শ্রমিকদের কাছে এখনো পাওনা দুই কোটি ২৯ লাখ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শ্রমিকদের বিলের চাহিদা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিয়েছি। সে অনুযায়ী শ্রমিকদের নগদ একাউন্টে ইতিমধ্যে ঢুকে গেছে। কিন্তু ত্রাণ ও দুর্যোগ অধিদপ্তর তাদের একাউন্ট বন্ধ করে রেখেছে।’
প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পলাশ মন্ডল বলেন, ‘২০২২-২৩ অর্থবছরে ভুল করে শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিং নগদ একাউন্টে অতিরিক্ত বিপুল পরিমাণ টাকা ঢুকে যায়। আমরা মোটা অংকের টাকা আদায় করতে পেরেছি। তবে এখনো শ্রমিকদের কাছে পাওনা রয়ে গেছে দুই কোটি ২৯ লাখ টাকা। এই জটিলতা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরকে জানিয়েছি।’

আরও খবর

🔝