gramerkagoj
শনিবার ● ৪ মে ২০২৪ ২০ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ তথ্য অধিকার আইনে আবেদন

বাঘারপাড়ায় কৃষি অফিসের তথ্য পেতে লাগবে ২০ হাজার টাকা!
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:২০:০০ পিএম , আপডেট : বুধবার, ১ মে , ২০২৪, ০৩:১৯:৩৪ পিএম
বাঘারপাড়া (যশোর) অফিস:
GK_2024-04-23_6627e0139dc86.jpg

বাঘারপাড়ায় তথ্য পেতে ২০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য চিঠি পাঠিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিস। তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করার এক মাস দুই দিন পর এ টাকা ব্যাংক চালানের মাধ্যমে পরিশোধ করতে একটি চিঠি পাঠান আবেদনকারীকে। এত টাকার বিনিময়ে কত পাতার ফটোকপি সরবরাহ করা হবে তা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি।
জানা গেছে, কৃষি বিষয়ে তথ্যের জন্য যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেছিলেন উপজেলার শালবরাট গ্রামের শান্ত দেবনাথ। গত ২০ মার্চ তিনি তথ্য প্রাপ্তির আবেদন ডাক বিভাগের মাধ্যমে প্রেরণ করেন। মঙ্গলবার সকালে বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের এক কর্মচারীর মাধ্যমে তিনি একটি চিঠি পেয়েছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তরুণ রায় স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে তথ্য প্রাপ্তির মূল্যের জন্য ২০ হাজার টাকা চালানের মাধ্যমে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গত ১৮ এপ্রিল স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আপনি গত ২০ মার্চ তথ্য প্রাপ্তির জন্য অত্র দপ্তরে আবেদন করেন। সব তথ্য প্রস্তুতের জন্য সময় প্রয়োজন। তথ্য প্রস্তুত সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে তথ্য দেওয়া হবে। উক্ত তথ্য প্রাপ্তির জন্য আপনি তথ্য অধিকার আইনের ৮(৪) ধারা মোতাবেক ২০ হাজার টাকা সরকারি চালানে জমাদানপূর্বক অত্র দপ্তর থেকে আবেদনকৃত তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।
তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ৮ ধারার (৪) উপ-ধারা(১) এ বলা হয়েছে, এর অধীন তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনুরোধকারীকে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক উক্ত তথ্যের জন্য নির্ধারিত যুক্তিসংগত মূল্য পরিশোধ করতে হবে। বিধি-৮ এ বলা হয়েছে, লিখিত কোনো ডকুমেন্টের কপি সরবরাহের জন্য (ম্যাপ, নক্সা, ছবি, কম্পিউটার প্রিন্টসহ) এ-৪ ও এ-৩ মাপের কাগজের ক্ষেত্রে প্রতি পৃষ্ঠা দুই টাকা হারে এবং তদুর্ধ সাইজের কাগজের ক্ষেত্রে তথ্য প্রাপ্তির অনুরোধ ফি বা তথ্যের মূল্য পরিশোধযোগ্য হবে।
আবেদনকারী শান্ত দেবনাথ জানান, বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট তথ্য অধিকার আইনে ‘ক’ ফরমে বিভিন্ন তথ্য চেয়ে গত ১৮ মার্চ আবেদন করেছিলাম। আবেদনপত্রে বাঘারপাড়া উপজেলায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর খরিপ-১, খরিপ-২ এবং রবি মৌসুম কোন কোন প্রকল্পের আওতায় কী কী ফসলের প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে, প্রকল্পগুলার নাম, প্রদর্শনী দেওয়া ফসলের নাম, ফসল অনুসারে প্রদর্শনীর জন্য বরাদ্দ বীজ, সার ও নগদ টাকার পরিমাণ (খাতওয়ারী), কৃষক প্রতি প্রশিক্ষণ ভাতা ও নাস্তার টাকার পরিমাণ, প্রদর্শনী পাওয়া কৃষকের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর; উপজেলায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর খরিপ-১, খরিপ-২ এবং রবি মৌসুম কোন কোন প্রকল্পের আওতায় কী কী ফসলের প্রদর্শনীর মাঠ দিবস পালন করা হয়েছে, প্রতিটি মাঠ দিবসে বরাদ্দ টাকার টাকার পরিমাণ (খাত ওয়ারী), মাঠ দিবসে অংশগ্রহণকারী কৃষকের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর এবং উপজেলায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কোন মাঠে বোরো হাইব্রিড ধানের ‘সমলয়’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, কতো বিঘা জমিতে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, প্রকল্প বরাদ্দের পরিমাণ, প্রকল্প সুনির্দিষ্টভাব আলাদাভাবে খাত ওয়ারী বরাদ্দের পরিমাণ, সুফলভাগী কৃষকের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর চাওয়া হয়।
তথ্য প্রাপ্তির আবেদনকারী শান্ত দেবনাথ আরও বলেন, চিঠি পেয়ে অবাক হয়েছি। তথ্য না দেওয়ার জন্য এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে আপীল কর্তৃপক্ষের নিকট আপীল করবো।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তরুণ রায় বলেন, ‘উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বর্তমানে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন। তথ্য প্রাপ্তির আবেদনটি সেই সময়ে করা। আমি কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী তথ্য প্রাপ্তির অনুরোধকারীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে আমি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছি মাত্র। বিষয়টি নিয়ে আমি ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবো। তিনি আরও বলেন, এখনো দায়িত্বপ্রাপ্তির অফিস আদেশ হাতে পাইনি’।

 

 

আরও খবর

🔝