শিরোনাম |
❒ শিখন ঘাটতি পূরণে শনিবারও খোলা থাকবে স্কুল-কলেজ
আগামী সপ্তাহের শনিবার থেকে খোলা থাকবে মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ও কলেজ। তবে, এখনো পর্যন্ত নির্দেশনা আসেনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে। গরমের মধ্যে শনিবার স্কুল খোলা রেখে শ্রেণি কার্যক্রম চালানো কতটুকু ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে সন্দিহান শিক্ষক-অভিভাবকরা। এ ধরনের প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকেই। তারা বলছেন, প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে যেখানে ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার আগেই ছুটি বাড়ানো হয়েছে, সেই একই অবস্থায় সাপ্তাহিক ছুটি শনিবার বাতিল করে শ্রেণি কার্যক্রম করা কতটুকু যুক্তিসম্মত। তাছাড়া, এই গরমের মধ্যে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মোট কথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত তেমন একটা কাজে আসবে না বলে মনে করছেন শিক্ষক অভিভাবকরা।
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রজ্ঞাপন নিয়ে কথা হড যশোরের একাধিক শিক্ষক-অভিভাবকের সাথে। কয়েকজন প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন,‘কোনো ছুটির আগে-পরে যেখানে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে না, সেখানে এই তাপদাহের মধ্যে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শনিবার যতই স্কুল খোলা থাকুক না কেন শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখি করা সাংঘাতিক কঠিন কাজ। এটি এক প্রকার অসম্ভব ব্যাপার।’
হাফিজুর রহমান নামে একজন অভিভাবক বলেন,‘এ ধরনের প্রজ্ঞাপন পরষ্পর বিরোধী। যেখানে চিকিৎসকরা বলছেন, এই গরমে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে, সেখানে শিক্ষাবিভাগ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি চিকিৎসকদের বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক হয়। আগে সন্তানের সুস্থ থাকা, তারপর লেখাপড়া। এই গরমে এক-দু’দিন ক্লাস করতে গিয়ে যদি কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে বাকি সময় ক্লাস করবে কী করে?’ এ ধরনের বক্তব্য সাবিনা ইয়াসমিন, রেবেকা সুলতানা, সোনিয়া ইসলাম, আব্দুল কাদের, আব্দুল জব্বার, মিন্টু ইসলামসহ অনেক অভিভাবকেরও।
এদিকে, ঈদের ছুটির পরে গরমের বাড়তি ছুটি শেষে স্কুল-কলেজ খুলছে আগামী রোববার। এরমধ্যে শনিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবার ক্লাস হবে কিনা সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এখনো।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে শ্রেণি কক্ষের বাইরের কার্যক্রম সীমিত রাখতে হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে। আরও উল্লেখ করা হয়েছে,‘তাপদাহ ও অন্যান্য কারণে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে যে শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা পূরণ এবং নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখন ফল অর্জনের জন্য পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত শনিবারও শ্রেণি কার্যক্রম চলবে।’
স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ যশোরের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বুলবুল বলেন,‘সাপ্তাহিক ছুটি দু’দিন থাকলে শিক্ষার্র্থীরা ধীরে সুস্থে হোমওয়ার্ক করতে পারবে। একদিন হলে কিছুটা হলেও চাপ তৈরি হবে। তাছাড়া, গরমের মধ্যে স্কুল খোলা রাখার পরেও তারা আসবে কিনা এটি বলা মুশকিল।’
শনিবার স্কুল খোলা রাখার বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুল আলম বলেন,‘এ ধরনের কোনো পত্র পাইনি আমরা।’ একই কথা বলেন জেলা শিক্ষা অফিসার মাহফুজুল হোসেন। তিনি বলেন,‘বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কোনো প্রজ্ঞাপন পাইনি।’