gramerkagoj
শুক্রবার ● ১০ মে ২০২৪ ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
বিশুদ্ধ পানি বিক্রিতেই চলে আঞ্জুয়ারা বেগমের সংসার
প্রকাশ : শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪, ০৯:৫৫:০০ পিএম , আপডেট : শুক্রবার, ১০ মে , ২০২৪, ১২:০৪:৪৬ এ এম
কামরুজ্জামান রাজু, কেশবপুর (যশোর):
GK_2024-04-27_662d202b8dd46.jpg

প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যেও থেমে নেই আঞ্জুয়ারা বেগম (৬৩)। কলস ও ড্রামে করে মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন বিশুদ্ধ খাবার পানি। এক বা দু’দিন নয়, টানা ৪২ বছর ধরে মানুষের বাড়ি গভীর নলকূপের (ডিপ টিউবওয়েল) পানি বিক্রি করে চালাচ্ছেন ছয়জনের সংসার। সকাল হলেই কলস ও ড্রাম নিয়ে গভীর নলকূপে ছুটে যান তিনি। গরম-শীত-বর্ষা কোনো কিছুই থামাতে পারেনি তাকে। আঞ্জুয়ারা বেগম কেশবপুর পৌরসভার মধ্যকুল আমতলা এলাকার আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী।
কেশবপুরে পৌর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভ্যানে করে পানি নিয়ে যাওয়ার সময় কথা হয় আঞ্জুয়ারা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে সংসার চালানোর জন্য মানুষের বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ খাবার পানি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। এলাকার অগভীর নলকূপে আর্সেনিকযুক্ত পানি উঠায় দূর থেকে আনা গভীর নলকূপের পানির চাহিদা বাড়তে থাকে। প্রথম তিনি কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে গভীর নলকূপের আর্সেনিকমুক্ত খাবার পানি কলসে ভরে কাকে (কোমরে) করে মানুষের বাড়ি পৌঁছে দিতেন। প্রতি কলস পানি বাবদ তখন তিনি পেতেন ২ টাকা করে। এভাবে পানি বিক্রি করা অনেক কষ্টসাধ্য হওয়ায় ধারদেনা করে একটি ভ্যান কেনেন। পরবর্তীতে পানির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসাডাঙ্গা, পাঁজিয়া, নতুনহাট, আলতাপোল, পাইলট স্কুল এলাকায় স্থাপিত গভীর নলকূপ থেকে পানি এনে বিক্রি করতে থাকেন। বয়স বাড়ার কারণে একলা ভ্যানে করে পানি ওঠানো এবং নামানো তার পক্ষ কষ্ট হওয়ায় সহযোগিতার জন্য স্বামীকে সঙ্গে রাখেন।
মধ্যকুল খানপাড়ার গভীর নলকূপ থেকে পানি আনার পথে আঞ্জুয়ারা আরও বলেন, বর্তমানে প্রতিদিন তাকে ৩০ ড্রাম পানি মানুষের বাড়ি পৌঁছে দিতে হয়। প্রতি ড্রাম পানি বাবদ তিনি ১০ টাকা করে পান। স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে পানি বিক্রির ৩০০ টাকায় চালান ছয়জনের সংসার।
তিনি বলেন, ‘সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে ভ্যানটাও এখন অকেজো হওয়ার পথে। ভ্যানটি পুরাতন হয়ে যাওয়ায় এখন আগের মতো চাকা ভালো ঘোরে না। পেছন থেকে স্বামী ভ্যান ঠেলে দিলেও এগিয়ে নিতে কষ্ট হয়। সংসারের ঘানি টেনে ভ্যান মেরামতের মতো টাকা কাছে থাকে না। অথচ গরম-শীত-বর্ষা উপেক্ষা করে মানুষের বাড়ি বাড়ি পানি পৌঁছে দিতে হচ্ছে। পানির অপর নাম জীবন। সেই পানি নিয়েই আমার সংগ্রাম। একটি ভালো ভ্যান থাকলে আমাদের কষ্ট লাঘব হতো। ভালোভাবে পানি পৌঁছে দিতে পারতাম মানুষের বাড়ি বাড়ি’। এ কারণে একটি ভালো ভ্যান কেনার জন্য ওই দ¤পত্তি দেশের দানশীল ব্যাক্তিদের নিকট সহায়তা চেয়েছেন।

আরও খবর

🔝