gramerkagoj
মঙ্গলবার ● ২১ মে ২০২৪ ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
gramerkagoj
আগামী ৫ মে থেকে লাগাতার ভারী বৃষ্টির আভাস,বোরো নিয়ে দুশ্চিন্তা চাষি-কর্মকর্তাদের
প্রকাশ : বুধবার, ১ মে , ২০২৪, ১২:০৪:০০ এ এম , আপডেট : মঙ্গলবার, ২১ মে , ২০২৪, ০১:৪৩:৩১ পিএম
এম. আইউব:
GK_2024-04-30_66311fd250c34.jpg

এক মাসের বেশি সময় ধরে অতি তীব্র তাপদাহে মানুষ যখন অতিষ্ঠ, প্রাণ যায় যায় অবস্থা; ঠিক সেই সময় কৃষকের মাথায় বাড়তি টেনশন এসে জড়ো হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাস দিয়েছে আগামী ৫ মে থেকে লাগাতার ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সাথে থাকতে পারে ঝড়ো হাওয়া। এই খবর শুনে বোরো চাষিদের মাথায় এক প্রকার হাত উঠেছে। আর দৌড়াদৌড়ি বেড়েছে কৃষি কর্মকর্তাদের।
৫ মের আগে যশোরে এক লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমির পাকা বোরো ধান ঘরে তুলতে গলদঘর্ম হচ্ছেন তারা। কর্মকর্তারা বলছেন, যেকোনো মূল্যে ৫ মের আগে চাষির মাঠে থাকা পাকা বোরো ধান ঘরে তুলতে হবে। তা না হলে লাগাতার ভারী বৃষ্টির মধ্যে পড়ে গেলে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন চাষি।
আবার মাঠের পাকা ধান নির্বিঘ্নে ঘরে তুলতে বাধ সাধছে অতি তীব্র তাপদাহ। আগুন ঝরা এই গরমের মধ্যে কৃষক সারাদিন ধরে মাঠে কাজ করতে পারছেন না। আশঙ্কা রয়েছে হিট স্ট্রোকের। এই প্রতিকূল অবস্থায় মাঠ থেকে ধান কাটার ক্ষেত্রে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের নির্দেশনা হচ্ছে, খুব সকাল থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত ধান কাটতে হবে। এরপর বিকেল চারটা থেকে রাত অবধি কাটা ধান পরিবহন করলে কৃষক ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন না।
৫ মে থেকে লাগাতার বৃষ্টির হাত থেকে পাকা ধান রক্ষা করতে কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিদিন মাঠে মাঠে যাচ্ছেন। তারা কৃষককে যেকোনো মূল্যে ধান কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দিচ্ছেন। করছেন মাইকিংও। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে নোটিশও সেঁটে দিচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এ মৌসুমে যশোরের আট উপজেলায় সর্বমোট এক লাখ ৬০ হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। যা, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২৬ হাজার ১৩৫, শার্শায় ২৩ হাজার ৮২৪, ঝিকরগাছায় ১৯ হাজার ৫৫০, চৌগাছায় ১৮ হাজার ৩৩৫, অভয়নগরে ১৪ হাজার ২৩০, বাঘারপাড়ায় ১৬ হাজার ৭৫১, মণিরামপুরে ২৮ হাজার ৮৯০ ও কেশবপুরে ১৩ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে।
ইতিমধ্যে ৪০ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৪ মের মধ্যে বাকি ৬০ শতাংশ জমির বেশিরভাগ ধান কর্তন করা সম্ভব হবে বলে তারা আশা করছেন। যেখানে শ্রমিকের সংকট সেখানে হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কেটে সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে, যশোরাঞ্চলের চাষিরা বলছেন, তারা বিচালি করেন। হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটলে বিচালি করা যায় না। এ কারণে অধিকাংশ চাষি যাতে বিচালি করা যায় সেই উপায়ে ধান কাটেন।
কৃষি বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে মাঠে থাকা ধানের তিন শতাংশ অপরিপক্ক রয়েছে। যা এখনই কাটা সম্ভব হবে না। তবে, বেশিরভাগ ধান ঘরে ওঠাতে পারলে চাষি যেমন দুশ্চিন্তামুক্ত থাকবেন, ঠিক তেমনি খাদ্য ঘাটতি রোধ করা যাবে।
এদিকে, মঙ্গলার যশোরে ৪৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে গত ৫২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড এটি। এর আগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৭২ সালের ১৮ মে। সেদিন রাজশাহীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের অতি তীব্র তাপদাহ। গত ৩১ মার্চ রাজশাহী থেকে এই তাপদাহ শুরু হয়। পরে তা সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়ে। কোথাও কোথাও রূপ নেয় অতি তীব্র তাপদাহে। দীর্ঘসময় ধরে চলা তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন।

আরও খবর

🔝