gramerkagoj
রবিবার ● ১৯ মে ২০২৪ ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
gramerkagoj
টানা বৃষ্টির খবরে দুশ্চিন্তায় চাষিরা চলছে ধান বাঁচানোর লড়াই
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ৭ মে , ২০২৪, ১২:০৫:০০ এ এম , আপডেট : রবিবার, ১৯ মে , ২০২৪, ০৪:৩৩:৩৮ পিএম
এম. আইউব:
GK_2024-05-06_6639089b2de4e.jpg

একটানা মাসের বেশি সময় ধরে তাপদাহের পর আবহাওয়া অফিস যখন ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছে, তখন মাঠে বোরো ধান কাটা চলছে। বৃষ্টির আগে যাতে মাঠের ধান বাড়িতে আনা যায় দিনরাত সেই সংগ্রাম করছেন কৃষক।
হাড়ভাঙা পরিশ্রম আর কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে বোরো ধান উৎপাদন করেছেন তারা। এই ধানই কৃষকের ভরসা। বোরো ধান বছরের বেশি সময় খোরাক যোগাবে। ধান বিক্রি করেই অন্যান্য খরচ করবেন চাষি। এসব কারণে ধান যেন সোনার চেয়েও দামি তাদের কাছে। ফলে, এই ‘সোনা’ রক্ষা করতে না পারলে সারা বছর ভাত জুটবে না কৃষক পরিবারে।
কেবল কৃষক পরিবার বললে ভুল হবে। শহুরে টাকাওয়ালারা চাল কোথায় পাবেন? খাবেন কী? সেই চিন্তুাও কৃষকের মাথায়। এসব কারণে ভাতের লড়াইয়ে জিততে চান যশোরের লক্ষাধিক চাষি।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এ মৌসুমে যশোরের আট উপজেলায় সর্বমোট এক লাখ ৬০ হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। যা, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২৬ হাজার ১৩৫, শার্শায় ২৩ হাজার ৮২৪, ঝিকরগাছায় ১৯ হাজার ৫৫০, চৌগাছায় ১৮ হাজার ৩৩৫, অভয়নগরে ১৪ হাজার ২৩০, বাঘারপাড়ায় ১৬ হাজার ৭৫১, মণিরামপুরে ২৮ হাজার ৮৯০ ও কেশবপুরে ১৩ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে।
অতি তাপদাহের এই প্রতিকূল অবস্থায় মাঠ থেকে ধান কাটার ক্ষেত্রে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের নির্দেশনা হচ্ছে, খুব সকাল থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত ধান কাটতে হবে। এরপর বিকেল চারটা থেকে রাত অবধি কাটা ধান পরিবহন করলে কৃষক ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন না। কিন্তু কে শোনে কার কথা! কৃষকের মাথায় এখন কোনো নির্দেশনা ঢুকছে না। তাদের একটাই চিন্তা, বৃষ্টি হওয়ার আগেই যেকোনো মূল্যে ধান বাড়িতে নিতে হবে। এজন্য তারা সকাল থেকে বিরামহীন কাজ করে চলেছেন। তা না হলে বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে ধান বাড়িতে আনতে পারবেন না।
তাছাড়া, নিজেদের খাবারের চিন্তার পাশাপাশি চাষির হালের বলদের চিন্তাও করতে হচ্ছে। এ কারণে তারা চেষ্টা করছেন বেশিরভাগ ধানের বিচালি বানানোর। যশোরে আমনের তুলনায় বোরো ধানের বিচালি বেশি হয়, ভালো হয়। এ সময় বিচালি শুকনো এবং চকচকে হয় বলে চাষিরা বলছেন। এ কারণে অধিকাংশ কৃষক বিচালি করার চেষ্টা করছেন।
ইতিমধ্যে ৭৫ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার। তিনি জানিয়েছেন, আবহাওয়া এমন হলে দু’একদিনের মধ্যে পুরোপুরি ধান কেটে ঘরে তোলা সম্ভব হবে। ৫ থেকে ১০ শতাংশ ধান কাটতে বাকি থাকবে। যে ধান একটু দেরিতে লাগানো। এ কারণে কাটতে দেরি হবে।
উপপরিচালক বলেন, যেখানে শ্রমিকের সংকট সেখানে হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কেটে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
টানা এক মাসের বেশি সময় ধরে অতি তীব্র তাপদাহে মানুষ অতিষ্ঠ হলেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই কৃষকের। তাদের এখন একটাই চিন্তা, যেকোনো মূল্যে জিততে হবে ভাতের লড়াইয়ে।

আরও খবর

🔝