
গরমে যশোরে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তার মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। প্রতিদিনই সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাগুলোতে এসব সমস্যা নিয়ে রোগীরা ভর্তি হচ্ছে। শনিবার যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমাসহ নানা সমস্যা নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীরা বেডের অভাবে ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালের সংক্রামক ওয়ার্ড, মেডিসিন ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গত সাতদিনে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ১শ’৪৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের অধিকাংশ গরমে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ২৪ শয্যার বিপরীতে ৪৬ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ছাড়া সংক্রামক ওয়ার্ডে ১০ শয্যার বিপরীতে ২৩ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। চিকিৎসা নিতে আসা অনেক শিশুর পিতা-মাতাই প্রয়োজনীয় চিৎকিসা সেবা না পেয়ে তাদের রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করছেন।
আব্দুল কুদ্দুস (৪৬), সদর উপজেলার চুড়ামনকাটির বাসিন্দা। গত ১০ বছর আগে তার হার্টে রিং পরানো হয়। এরপর থেকে তিনি ফলোআপে ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তিনি তিন দিন আগে হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা পেয়ে এখন সুস্থ আছেন। শুধু তিনি নয় তার মতো অনেক রোগী হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন।
সদর উপজেলার আবাদ কচুয়া গ্রামের দরিদ্র ইজিবাইক চালক আমিনুর কাজী বলেন, ৭৩ বছর বয়সী পিতা হাসান ফকির ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করি। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় চিকিৎসার জন্যে ডাক্তাররা তাকে খুলনা নিয়ে যেতে বলেন। টাকার অভাবে এখনও পর্যন্ত পিতাকে অন্য কোথাও ভর্তি করতে পারেনি।
যশোর শহরের ঘোষপাড়া এলাকার আবিদা খাতুন বলেন, তিন দিন ধরে ছেলেটার জ্বর হয়েছে। সঙ্গে সর্দি কাশিও আছে। শিশু হাসপাতালে নিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা রাখেনি। এই হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে। এখানে আছি ছেলেকে নিয়ে আছি। কয়দিন থাকতে হবে জানি না।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, এসব রোগের মূলে প্রচ- গরম। গরমে শিশুদের ডিহাইড্রেশন তৈরি হয়। এজন্যে প্রচুর পানি পান করাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে পানি যেন বিশুদ্ধ হয়। বাসায় তৈরি শরবত ছাড়াও ডাবের পানি খাওয়াতে হবে। খাওয়ার আগে শিশুদের সাবান অথবা হ্যান্ডওয়াসে অভ্যস্ত করতে হবে।
নবজাতক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আব্দুস সামাদ জানিয়েছেন, ‘তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সিজনাল ফ্লু এবং ভাইরাল ফ্লু বেড়ে গেছে। প্রচ- গরম আর ধূলাবালিতে শিশুদের ইনফ্লুয়েঞ্জা বেশি হচ্ছে। এ কারণে ঠা-া-কাশি, শ্বাসকষ্ট, চিকেন পক্স ও চর্মরোগ হচ্ছে। শিশুদের বেলায় অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।