
রোজা ছাড়া অন্যান্য যে সকল ইবাদাত আছে,তা পালন করার জন্য কোনো না কোন ভাবে বাহ্যিক প্রকাশের আশ্রয় নিতে হয়।কিন্তু রোজার কথা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। এমনকি একজন ব্যক্তি যদি সকলের সামনে সেহেরী খায় এবং সকলের সামনে ইফতারী করে আর দিনের বেলায় গোপনে কিছু খায় বা পান করে তবে তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না । এমনকি তাকে অন্যন্য সকলেই রোজা দার বলে জানলেও সে আসলে রোজাদার নয় এবয় তা জানে কেবর আল্লাহ তায়ালা।আর এ জন্যই আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, রোজা আমার জন্য আর আমিই এর পূরষ্কার প্রদান করব। আর তাই অন্যান্য উবাদতের চেয়ে রেজার মাধ্যমে ঈমান বৃদ্ধি পায়। কেননা একজন রোজা দার যখন ক্ষুদা ও পিপাসায় তার প্রান যায় অবস্থা তখনও সে আল্লাহর ভয়ে কোন খাবার এমনকি সকলের চোখের অগচরে ও সে এক ফোটা পানি পান করে না। কারণ সে জানে দুনিয়ার কেউ না দেখলেও মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন অবশ্যই দেখছেন। আর রোজা আসলে মুসলমানদের এই অনুভূতি শিক্ষা দেওয়ার জন্যই এসেছে। আর আল্লাহর ভয় জাগানোর জন্যই আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এ রোজার আয়োজন। তাই কুরআন নাযিলের এই মাসে আমাদেরকে আল-কুরআন থেকে প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ করে সেভাবে আমাদের জীবনের চলার পথ বেছে নিতে হবে। তাছাড়া আল্লাহর ভাষায় সমগ্র মানব জাতি ক্ষতিগ্রস্ততার মধ্যদিয়ে কালাতিপাত করবে। সূরা- আল আসরের যে সতর্কবাণী আমাদের সামনে আছে “নিশ্চয়ই সমগ্র মানব জাতি ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যদিয়ে কালাতিপাত করছে- তারা নয় যারা ঈমান এনেছে, নেক আমল করেছে, হক প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করেছে এবং ধৈর্যধারণ করার প্রতিযোগিতা করেছে অর্থাৎ যে কোন প্রতিকূল পরিস্থিতিই আসুক না কেন প্রকৃত ঈমানদার তারাই যারা ঈমান এনেছে, নেক আমল করেছে এবং সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে এবং সংগ্রাম করতে যেয়ে ধৈর্য ও সহনশীলতার মাঝে সকল কাজ আনজাম দিয়েছে। আল্লাহ আমাদের পবিত্র রমজানে পবিত্র কুরআনের সূরা আসরের আলোকে সেইরকম ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে দ্বীনী আন্দোলন চালিয়ে যাবার তাওফীক দিন, এই কামনা করি। আর এটাও মনে রাখতে হবে,লাইলাতুল কাদরের রাত্রিতে আল্লাহ মানব জাতির পরিপূর্ণ জীবন বিধানসম্বলিত একটি গ্রন্থ দান করে যে বিশেষ বৈশিষ্ট্যতা দিয়েছেন সেজন্যই উক্ত রাত্রি আমাদের নিকট এত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ এই পবিত্র রাত্রিতে আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে বলে এই রাত্রির এত বড় মর্যাদা। কিন্তু প্রতি বছর আমাদের নিকট লাইলাতুল কাদর আসে এবং যায়, কিন্তু যে রাত্রি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম সে রাত্রির কোন আবেদন আমাদেরকে স্পর্শ করতে পারছে না। ফলে আমরা আমাদের বাস্তব জীবনে তার কোন প্রতিফলন দেখতে পাইনা। আল-কুরআনের আলোকে জীবন গড়ার যে শপথ মুসলমানদের নেয়ার কথা তা কোন মুসলিমই নিতে পারছেনা। আমরা নিজেদের মুসলিম জাতিসত্ত্বার ভিত্তিতে ঐক্য গড়ার পরিবর্তে বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী আন্দোলন নিয়ে বেশী ব্যস্ত। সেজন্য মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মুহাম্মদ আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে ইহূদী এবং খৃস্টানদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন হয়ে আমাদের করণীয় সম্পর্কে সজাগ করে দিয়েছেন। রামাযানের এই দিনে আমরা যদি আল-কুরআন অনুশীলন করে আমাদের করণীয় নির্ধারণ করতে পারি তাহলে সমস্যাসঙ্কুল এই পৃথিবীতে আমরা দিশেহারা হয়ে ঘুরে বেড়াতাম না।