এম. আইউব :

ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত কোরবানির প্রস্তুতি প্রায় শেষ। অপেক্ষা কেবল রাতটুকু পোহানোর। সোমবার সারাদেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আযহা। বিশ্বের মুসলমানদের সাথে বাংলাদেশেও সর্বোচ্চ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, যথাযোগ্য মর্যাদা, বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ত্যাগের মহিমায় কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। সকল মুসলমান ঈদুল আযহার নামাজ শেষে মহান রবের উদ্দেশে পশু কোরবানি দিবেন। পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন আর মনের পশুত্বকে কোরবানি করার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি হাসিলই কোরবানির একমাত্র লক্ষ্য।
কোরবানির ইতিহাস সুপ্রাচীন। প্রায় চার হাজার বছর আগে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় মুসলমানদের আদি পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.) নিজের কলিজার টুকরা ছেলে ইসমাইলকে কোরবানি করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে ইসমাইলের পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হযরত ইব্রাহীম (আ.) এর সেই ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করে থাকেন।
আগামীকাল সোমবার সকালে বিভিন্ন বয়সের মানুষ শরিক হবে ঈদের জামাতে। এক কাতারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আদায় করবে ঈদের নামাজ। ভুলে যাবে সব ভেদাভেদ। দু’রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের পর কোলাকুলি, শুভেচ্ছা ও সৌহার্দ্য বিনিময় করবে। নামাজ শেষে বাড়ি ফিরে মহান আল্লাহ তায়ালার উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি এই ঈদের প্রধান কর্তব্য। সামর্থ্যবানরা নিজেদের কিংবা প্রিয়জনের নামে পশু কোরবানি করে আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ে সচেষ্ট হবেন। যাদের সামর্থ্য নেই তারাও বাদ যাবেন না ঈদের আনন্দ থেকে। আল্লাহ তায়ালা সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্যে পশু কোরবানি ফরজ করেছেন।
কোরবানির গোশতের তিনভাগের এক ভাগ দরিদ্র মানুষের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া ইসলামে সাম্যের বিধান। যার মধ্যদিয়ে গড়ে উঠবে সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্ববোধ। ঈদের পরে আরো দু’দিন, অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও পশু কোরবানি করা যাবে।
ঈদুল আযহা আমাদের দেশের মানুষের কাছে কোরবানির ঈদ নামেই পরিচিত। কোরবানির পশু কেনা, তার যতœ পরিচর্যাতেই ঈদের মূল প্রস্তুতি ও আনন্দ। ইতোমধ্যেই অনেকে তাদের পছন্দের পশু কিনে ফেলেছেন। যাদের কেনা বাকি, তারা ছুটছেন এহাটে ওহাটে।
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে দুর্ভোগ উপেক্ষা করে শহর ছেড়ে সপরিবারে গ্রামে যাত্রা শুরু করেছে অগণিত মানুষ। বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটে ঘরমুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড় শেষ মুহূর্তেও।
যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮ টা ১৫ মিনিটে। এ ছাড়া, শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন ঈদগাহে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত। তবে, বৃষ্টি হলে অধিকাংশ জায়গায় মসজিদে নামাজ পড়ার প্রস্তুতি রয়েছে স্ব স্ব এলাকার মুসল্লীদের।