
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে ৩ দফায় বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আর এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিলো ৬ ঘাতক। টানা ৫ ঘন্টা চলে নারকীয় তাণ্ডব।
তথ্য মতে, রুম নম্বর ২০১১, শেরেবাংলা হল, বুয়েট। রাত নয়টার দিকে শুরু হয় মারপিট। নেতৃত্বে ইফতি মাহবুব সকাল। তিন দফা পেটানো হয়েছে আবরারকে। মারধর শুরু করেন বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন। পরে যোগ দেন আরও পাঁচজন।
এরা হলেন- অনিক, সকাল, জিওন, মনির ও মোজাহিদুল। দ্বিতীয় দফায় মারপিট শুরু করেন অনিক, ছিলেন সবচেয়ে মারমুখী। আবরারের শরীরের উপর ভাঙেন ক্রিকেট স্ট্যাম্প।
সূত্র বলছে, তৃতীয় দফার মারপিট শুরু মুন্নার কক্ষেই। ছয় জনের পিটুনিতে এবার লুটিয়ে পড়ে আবরার। এরপর নীথর দেহটিকে টেনে হিচেড় নিচে নামানোর চেষ্টা করেন ঘাতকরা। মাঝ সিড়িতে যেতেই তারা বুঝতে পারেন আবরার মারা গেছে। সেখানেই মরদেহটি রেখে পালিয়ে যায় তারা।
এদিকে আবরার হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা ১০ আসামি গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন ডিবির ঢাকা দক্ষিণের এডিসি রাজিব আল মাসুদ।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে তারা যেটা বলেছে, যে হত্যার মোটিভ টি আসলে হত্যার জন্য ছিল না। মরাপিট করতে করতে এক পর্যয়ে ভিকটিম মারা যায়। যাদেরকে আমরা ধরেছি, তারা মারপিটি অংশ গ্রহণ করেছে, এরকমটা স্বীকার করেছে।
‘এজাহারের নাম থাকলে যে কেউ আসামি হবে। বিষয়টা এমন না। বিষয়টা তদন্ত সাপেক্ষে বের করতে হবে। এর ঘটনার সাথে যারা জড়িত ছিল, প্রাথমিক ভাবে তারা ধরা পড়েছে। আমরা তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, যাদের নাম পেয়েছি, তাদের নাম নোট করেছি। সে ক্ষেত্রে অমিত শাহ কেনো অন্য কেউ যদি থাকে তাদেরকেও ধরা হবে।’
প্রসঙ্গত, রোববার মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবরারকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় নিহতের বাবা মো. বরকত উল্লাহ ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েক জনকে অভিযুক্ত করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এদিকে মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টায় নিজ বাসার সামনে আবরারের তৃতীয় জানাজা শেষে স্থানীয় রায়ডাঙ্গা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।