
হাওড়া সংশোধনাগার থেকে বন্দি উঠে গেল ছাদে। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গেল সংশোধনাগারে। সূত্রের খবর, দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় তাঁকে ছাদ থেকে নামানো সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে দমকল বাহিনীকে খবর পাঠানো হয়। তাঁরাই ছাদ থেকে ওই ব্যক্তিকে নামানোর চেষ্টা করে চলেছেন। প্রায় চার ঘণ্টা হয়ে গেলেও তাঁকে নামানো যায়নি। বরং ছাদ থেকে আক্রমণাত্মক আচরণ করতে থাকেন তিনি। পাথর ছোঁড়ার চেষ্টা করে। ব্লেড নিয়ে নিজেকে আঘাত করারও চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।
সূত্রের খবর, খুনের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তি হাওড়া সংশোধনাগারে বন্দি। শনিবার দুপুর নাগাদ নিজের সেল থেকে কোনওক্রমে পালিয়ে আচমকাই সিঁড়ি ভেঙে একেবারে ছাদে উঠে যান ওই বন্দি। সেখানে উঠে তিনি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলতে থাকেন। সূত্রের খবর, তিনি চিৎকার করে জানান যে জেলে বন্দিদের ঠিকমতো খেতে দেওয়া হয় না। একাধিক বেআইনি কাজকর্ম চলে জেলের ভিতরে। যাতে প্রচ্ছন্ন মদত থাকে জেল কর্তৃপক্ষেরও।
এ প্রসঙ্গে সংশোধনাগারের ভিতরে মাদক পাচার এবং তা ঘিরে বড়সড় ব্যবসার অভিযোগও তুলেছেন ওই ব্যক্তি। সেইসঙ্গে কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নাম করেও তিনি অভিযোগ করতে থাকেন যে মেয়রের মদতেই তাঁকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করে জেলে রাখা হয়েছে। পরে দেখা যায়, তাঁর হাতে একটি পোস্টার, সেখানে লেখা – দিদিকে ডাকো।
এরপরই তাকে ছাদ থেকে নামানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ঘন্টা দুয়েক ধরে চেষ্টা করেও তাঁকে নামানো যায়নি। এরপর বাধ্য হয়েই সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ দমকল বিভাগে খবর পাঠান। দমকল কর্মীরা হাওড়া সংশোধনাগারে গিয়ে ছাদে মই লাগিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে হাওড়া সংশোধনাগার সংলগ্ন এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে বোঝার চেষ্টা করেন, কী ঘটেছে। তবে এখনও ওই ব্যক্তিকে ছাদ থেকে নামানো যায়নি, তার জেরে উদ্বেগ বাড়ছে। ওই বন্দি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে এমন আচরণ করছেন কি না, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে কর্তৃপক্ষের। তবে তাঁকে ছাদ থেকে উদ্ধার করা না গেলে, কোনও কিছুই বোঝা যাবে না বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে এই মুহূর্তে বন্দিকে ছাদ থেকে নামানোই মূল লক্ষ্য। এই ঘটনায় জেলের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।