
করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে প্রশাসনের বেধে দেওয়া নির্দেশনা মানছেন না যশোর জেলার মণিরামপুরের অনেক মানুষ। জনসমাগম ঠেকাতে সকাল নয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সেনা, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার সদস্যদের নিয়ে ক্রমাগত অভিযান পরিচালনা করছেন ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুফলচন্দ্র গোলদার।
অভিযান অব্যাহত থাকলেও সকাল নয়টার পরপরই মণিরামপুর বাজারে লোকসমাগম শুরু হয়। ভিড় লেগে থাকে রাজগঞ্জ মোড়সহ বাজারের প্রধান সড়কে। গ্রামাঞ্চলের বাজার, দোকানপাটের অবস্থাও একই।
ওষুধ, নিত্যপণ্যের দোকান, কাঁচাবাজার ছাড়া অন্য সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও অনেকেই তা মানছেন না। বেলা বাড়ার সাথে সাথে মণিরামপুর বাজারে ফলের দোকান থেকে শুরু করে চায়ের দোকান, খাবার হোটেল, কাপড়, প্রসাধনী, হার্ডওয়ার, ইলেক্ট্রনিক্স এমনকী সোনার দোকানও খোলা থাকতে দেখা যাচ্ছে।
প্রশাসন বাজারে অভিযানে নামার খবর পাওয়ামাত্র দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে; ফাঁকা হয়ে পড়ছে প্রধান সড়ক। নিত্য প্রশাসনের সঙ্গে চলছে এই লুকোচুরি খেলা।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুফলচন্দ্র গোলদার বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় কাপুড়িয়াপট্টিতে দোকান খোলা রেখে পালিয়ে যান নিউ শাড়ি প্যালেসের মালিক মাস্টার মোশারেফ হোসেন। পরে তাকে খুঁজে এনে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এরআগে সোমবার সকালে অভিযানকালে পাইকারি কাঁচাবাজারের পেছনের খাবার হোটেলটি খোলা পান আদালত। আদালতকে দেখে মালিক মিন্টু হোটেল ফেলে পালিয়ে যান। ফলে তাকে জরিমানার আওতায় আনতে পারেননি ম্যাজিস্ট্রেট সুফল। আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল মান্নান এসব তথ্য জানান।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মণিরামপুরের পশ্চিম এলাকার সোহরাব মোড়, টেংরামারী বাজার, শেখপাড়া, কোদলাপাড়া, ভান্ডারি মোড়, রোহিতা, বাসুদেবপুর বাজার, সরণপুর জামতলা, কাশিমপুর মোড়, মুড়াগাছা বাজার, ইত্যা বাজারসহ গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন মোড়ে প্রতিদিন সকাল-সন্ধে ব্যাপক লোকসমাগম হচ্ছে। খোলা থাকছে চা দোকানগুলো। দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি লোক আসার খবর পেলেই লোকজন দ্রুত সটকে পড়ছেন।
সরণপুর এলাকার ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, এখানকার মানুষজন সকাল বিকেল মোড়ে জমায়েত হচ্ছেন। ভাবটা এমন- তারা দেশের পরিস্থিতি কিছুই জানেন না।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জনসমাগম এড়াতে সকাল আটটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত মুদি দোকান এবং সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত কাঁচাবাজার খোলা থাকবে। এছাড়া ওষুধের দোকান ছাড়া সব দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে নজর রাখার জন্য প্রশাসন ছাড়াও প্রতি ওয়ার্ডে ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা নিত্য অভিযান চালাচ্ছি। নির্দেশ অমান্য করে দোকানপাট খোলা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রাস্তায় বা বাজারে লোকজন পেলে তাদের বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জনসমাগম ঠেকাতে আমরা যথাসাধ্য কাজ করে যাচ্ছি।