
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় চলতি বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিস্তীর্ণ মাঠে দোল খাচ্ছে সোনালি ধান। তবে বৈরী আবহাওয়া ও ধানের ন্যায্যমূল্য নিয়ে শঙ্কিত রয়েছেন কৃষক।
এরই মধ্যে মাঠ থেকে ৭৫ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ। তবে চলতি বছর মহামারি করোনার জন্য বাইরে থেকে দিন মজুর আসতে না পারার কারণে কৃষকদের ফসল কাটতে দারুণ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অনেক কৃষক অধিক টাকা ব্যয় করে জমির ধান কাটতে বাধ্য হয়েছেন। কৃষকরা জমি থেকে ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ১৪ হাজার চারশ’ হেক্টর জমিতে ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে ১৩ হাজার আটশ’ ৯০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মোট ৩৪ হাজার সাতশ’ ২৫ জন কৃষক চলতি বছর রোরো ধান আবাদ করেছেন। এর মধ্যে ৭৫ ভাগ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। বাজারে চিকন ধান এক হাজার টাকা থেকে এক হাজার দশ টাকা মণ এবং মোটা ধান নয়শ’ ৫০ টাকা থেকে নয়শ’ ৬০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। আর সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের জন্য দশ হাজার চারশ’ ৭৩ জন কৃষকের প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার মেগুরখিদ্দা গ্রামের ধানচাষি মাহবুবুর রহমান, সিংগী গ্রামের বাসু দাস ও প্রবীর দাসসহ একাধিক চাষি জানান, তাদের ধান চাষে তারা ভালো ফলন পেয়েছেন। এর মধ্যে ধান কাটা শেষ করেছেন। এখন চলছে ধান ঝাড়া। কিন্তু ধানের ন্যায্যমূল্য পাবেন কি-না তা নিয়ে তারা শঙ্কিত।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জাহিদুল করিম জানান, আগামী ১৭ মে থেকে সরকারিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। চলতি মৌসুমে দু’হাজার পাঁচশ’ ৪৪ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার চারশ’ ৭৩ জন কৃষকের তালিকা করা হয়েছে। সেখান থেকে লটারির মাধ্যমে দু’হাজার পাঁচশ’ ৪৪ জন কৃষককে চূড়ান্ত করে তাদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। একজন মাত্র এক টন ধান বিক্রি করতে পারবেন। কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান কেনা যাবে।