
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে করোনা যুদ্ধে প্রথম সারির সম্মুখযোদ্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. খালেদুর রহমান মিয়া। সর্বদা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা রোগী শনাক্ত এবং আক্রান্তদের তিনি সর্বোচ্চ সেবা প্রদানে আন্তরিক।তিনি যেভাবে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে চলেছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। যখনই তিনি করোনা উপসর্গ বিদ্যমান কারো খোঁজ পান, সাথে সাথে ছুঁটে যান তার বাড়িতে নমুনা সংগ্রহের জন্য। কিভাবে রোগীদের বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা যায়, তা নিয়ে তিনি সর্বদা ব্যতিব্যস্ত থাকেন। বাড়িতে আইসোলেশনে থাকা করোনা রোগীদের এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তিকৃত এলাকার রোগীদের পরিবারের সাথে সর্বদা তিনি নিবিড় যোগাযোগ রাখেন। নিয়মিত খোঁজ খবর নেন রোগীদের অবস্থার।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি করোনাভাইরাস সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সচেষ্ট। এছাড়া প্রতিদিন করোনা শনাক্ত এবং আক্রান্তদের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কেও ফেসবুকে আপডেট দেন। সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যমেই তিনি বোয়ালমারী হাসপাতালের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা এবং চাহিদার বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন।যার ফলে এলাকার বিত্তশালীদের নিকট থেকে হাসপাতালের জন্য সহায়তা আদায় করা সম্ভব হয়।
ডা. মো. খালেদুর রহমানের প্রচেষ্টাতেই বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে 'করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড'স্থাপন সম্ভব হয়েছে। সেই সাথে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডের জন্য ব্যবস্থা করেন অক্সিজেন সিলিণ্ডার ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র। উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন এজন্য এক লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেন। তাতে বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হওয়া করোনা রোগীদের জন্য ৪ টি অক্সিজেন সিলিণ্ডার, ৪টি অক্সিজেন ফ্রো-মিটার ও ১ টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র স্থাপন করেন।
এছাড়া হাসপাতালেচিকিৎসা নিতে আসা সকলকে হাসপাতালের ভেতরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে প্রবেশের ব্যবস্থা করেন। এজন্য হাসপাতাল ভবনে প্রবেশ মুখে জনৈক ব্যবসায়ী গোপাল সাহার অর্থায়নে বেসিন স্থাপন করেন।
হাসপাতালের জনবল কম থাকায় তার প্রচেষ্টাতেই হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতার জন্য এক বছরের জন্য নিয়োগ দেন একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী, যার বেতনের টাকা যোগান দেবেন এলাকার একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সহৃদয় ব্যক্তি। এলাকার জনৈক বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আ স ম ওয়াহিদুজ্জামান তিতাসের আর্থিক সহযোগিতায় কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহ কক্ষ স্থাপন করেন। এসবই তার প্রচেষ্টা এবং স্বাস্থ্য সেবায় আন্তরিকতারজন্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। এসব তিনি করেছেন করোনার নমুনা সংগ্রহের সুবিধার্থে এবং এলাকার করোনা আক্রান্তদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে।
এ ব্যাপারে কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের প্রভাষক জাহিদুল পল্লব বলেন, বাংলার ঘরে ঘরে ডা. খালেদের মত নিবেদিত প্রাণ চিকিৎসক থাকলে সাধারণ মানুষের দুর্দশা অনেকটাই লাঘব হতো। জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে ফ্রন্ট লাইনে করোনার বিরুদ্ধে তার এই অল আউট এটাকিং জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।