
বাংলাদেশে সব হিসাব নিকাশ উল্টে দিয়েছে করোনাভাইরাস। আগে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছিলেন, বড়জোর মে মাস পর্যন্ত থাকবে এই ভাইরাসের দাপট। কিন্তু এখন তারা বলছেন, সহজে দূর হবে না করোনা, বাংলাদেশে অনেকদিন থাকবে এই অতিথি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অবশ্য করোনা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার জন্য জনগণের অবাধ মেলামেশাকেই দায়ী করছেন।
এর আগে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সবকিছু স্বাভাবিক করার জন্য কড়াকড়ি শিথিল করা হয়েছিল। দেশের সড়কগুলোতে গনপরিবহন ছাড়া সকল ধরনের যান চলাচল অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। দোকানপাট খোলারও অনুমতি দিয়েছিল সরকার। যদিও সব ব্যবসায়ী কিন্তু এতে সামিল হননি, অনেকে নিজ দায়িত্বেই শপিংমল বন্ধ রেখেছেন। অবশ্য কিছু মার্কেট খুলেছে। কিন্তু দোকান মালিক সমিতি বলছে, এতে তাদের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। এটা সম্পূর্ণভাবে দোকান মালিকদের সিদ্ধান্ত।
এদিকে দেশে শর্তসাপেক্ষে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ফের বাড়িয়ে ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। ১৫টি শর্তে এবার বাড়ানো হয়েছে ছুটি।
১৫টি শর্তের অন্যতম হচ্ছে-দেশের এক জেলা থেক অন্য জেলায় যাওয়া যাবে না। ঈদের ছুটিতে কর্মস্থল ত্যাগ করে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া যাবে না।
রোববার সকাল থেকে হঠাৎ করেই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঢাকায় আসতে বা বাইরে যেতে পারবেন না। ঢাকা মহানগর পুলিশের তরফ থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রাজধানীর প্রবেশ পথে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে।
এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের করোনা পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে। এ সম্পর্কে জাতীয় রোগ তত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের উপদেষ্টা ডা. মোশতাক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, তার ধারণা করোনায় আক্রান্ত রোগীর প্রকৃত সংখ্যা ১০ থেকে ৪০ গুন বেশি হবে।
তবে সামাজিকভাবে হেনস্থা হবার ভয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনা টেস্ট করতে আসছেন না বলেও জানান ডা. মোশতাক হোসেন। এখন যাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে শতকরা ১৪ ভাগকে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে নিশ্চিত করা হচ্ছে।
দেশে গত ২৪ ঘন্টায় ১২৭৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১৪ জন। সবমিলিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ২৬৮ জন। এতে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৩২৮ জন। সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা