
যশোরের চৌগাছায় উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ করোনা মোকাবেলায় যখন ব্যস্ত সময় পার করছে ঠিক সেই সময় এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। চক্রটি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পাতিবিলা ইউনিয়নে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বালি উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। ফলে, সরকারি রাস্তা, বাড়িঘর, বাড়ির উঠোন এবং ফসলি জমি ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ইউনিয়নবাসী।
ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের মধ্যে ছোট নিয়ামতপুর, বড় নিয়ামতপুর, পাতিবিলা, মুক্তদাহ, হয়াতপুর গ্রামে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিনই এ কাজ চলছে। ফলে, চাষযোগ্য জমি ধ্বংস হচ্ছে। এলাকার অনেক পুকুর ধসে পড়ছে। এ কারণে মাছচাষিরা স্বাভাবিকভাবে মাছ চাষ করতে পারছেনা।
সরেজমিন দেখা যায়, বসবাসের এলাকা ও মাঠের জমি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অধিকাংশ জমিতে বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বাদামসহ নানা সবজি চাষের জন্যে ইউনিয়নটি বিখ্যাত হলেও ধীরে ধীরে আবাদি জমি সংকুচিত হচ্ছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে বিদ্যুৎ, বিশে, আতিয়ার রহমান, রওশন আলী নামে চারজন বালি উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন। প্রতিদিন ট্রাকে করে বালি নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করছেন।
অভিযোগকারীরা বলেন, বারবার বাধা দেয়ার পরও তারা বালি উত্তোলন করেই যাচ্ছেন। প্রভাবশালী মহলের মদদে তারা কাউকে তোয়াক্কা করছেন না। গত কয়েক মাস ধরে বালি উত্তোলনের কারণে মমিনুল হকের জমি ধসে গেছে। উপড়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি বড় মেহগনি গাছ। ধসে গেছে অনেকের বাড়ি যাতায়াতের রাস্তা। ইতোপূর্বে নুরুল ইসলাম, ওলিয়ার রহমান, রবিউল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, নুর ইসলাম, শামছুল আলম, রুহুল আমিন, মশিয়ার রহমান, নূর নবি, নাসির উদ্দিন বালি উত্তোলনের বিষয়ে একাধিক অভিযোগ দিয়েছেন। তারপরও বন্ধ হয়নি। মর্জাদ বাওড় সংলগ্ন ঘোষপাড়ার নীচে বিদ্যুৎ নামে একব্যক্তি দেদারছে বালি উত্তোলন করছেন। দিন রাত স্যালোমেশিনের মাধ্যমে মাটির তলদেশ থেকে তুলে আনা হচ্ছে বালি। এরফলে, আশপাশের জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, ‘সামান্য টাকার জন্যি জমিডা শেষ করে দিলাম। এখন আমি নিষেধ করলেও তারা শুনছেনা।’চৌগাছা-কোটচাঁদপুর পাকা সড়ক ধরে পাতিবিলা ইউনিয়নে ঢুকলে সড়কের দু’পাশে বালি উত্তোলনের দৃশ্য চোখে পড়ে। এ কারণে পাকা সড়কও ক্ষতির সম্মুখিন। যেকোনো সময় পাকা সড়ক ধসে পড়বে বলে স্থানীয়রা জানান।
এ বিষয়ে উপজেলার নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বালি উত্তোলনের বিষয়ে আমি খোঁজখবর নেব। পরিবেশের ক্ষতি করে যদি কেউ অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে তাহলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’