
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। সোমবার দুপুর ১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া চিকিৎসাধীন আরও মুসল্লিদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনির ফরাজী নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসাধীন বাকি ১০ জন হলেন- ইমরান (৩০), মামুন (২৩), আমজাদ (৩৭), আ. সাত্তার (৪০), হান্নান (৫০), আ. আজিজ (৪০), রিফাত (১৮), নজরুল ইসলাম (৫০), মো. কেনান (২৪), শেখ ফরিদ (২১) ও মো. ফিড (৫৫)। তাদের মধ্যে ফরিদ, কেনান, আজিজ, আমজাদ ও আবুল বাশারকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদে ছয়টি এসির একটিও বিস্ফোরিত হয়নি। লিকেজ থেকে বের হওয়া গ্যাস এবং বিদ্যুতের স্পার্ক থেকে বের হওয়া আগুনেই এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির প্রধান উপ-পরিচালক নূর হাসান আহমেদ।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে মসজিদের ভেতরে থাকা প্রায় ৫০ জনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হুড়াহুড়ি করে বের হওয়ার চেষ্টা করেন তারা। তাদের মধ্যে দগ্ধ অবস্থায় ৩৭ জনকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রথম মৃত্যু হয় জুয়েল নামের এক শিশুর। মৃতের তালিকায় রয়েছেন মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনও। রোববার রাতে মারা যান মসজিদের ইমাম।
শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত এক শিশুসহ ১০ জনের জানাজা শেষে দাফন করা হয়। চোখের জলে প্রিয়জনকে দাফন করেন স্বজনরা।
ভর্তির পর ডা. সামন্ত লাল সেন জানিয়েছিলেন, এ পর্যন্ত ৩৭ মুসল্লিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের সবারই ডিপবার্ন রয়েছে। শতাংশের হিসেবে কোন রোগীর কতটুকু বার্ন হয়েছে তা তাৎক্ষণিক বলা যাচ্ছে না। কেউ শঙ্কামুক্ত নন।
মৃতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন- মনির ফরাজী (৩০) মসজিদের ইমাম আবদুল মালেক (৬০), মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮) ও তার ছেলে জুনায়েদ (১৭), দুই ভাই জোবায়ের (১৮) ও সাব্বির (২১), মুন্সীগঞ্জের কুদ্দুস ব্যাপারী (৭২), চাঁদপুরের মোস্তফা কামাল (৩৪), পটুয়াখালীর গার্মেন্টস কর্মী রাশেদ (৩০), হুমায়ুন কবির (৭২), পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর জামাল আবেদিন (৪০), গার্মেন্টস কর্মী ইব্রাহিম বিশ্বাস (৪৩), কলেজ শিক্ষার্থী রিফাত (১৮), চাঁদপুরের মাইনুউদ্দিন (১২), ফতুল্লার জয়নাল (৩৮), লালমনিরহাটের গার্মেন্টস কর্মী নয়ন (২৭), নিজাম (৩৪), নারায়ণগঞ্জের রাসেল (৩৪), খুলনার কাঞ্চন হাওলাদার (৫০), শিশু জুয়েল (৭) এবং বাহার উদ্দিন (৫৫), নাদিম (৪৫) জুলহাস (৩৫) শামীম (৪৫)।