
গরু পাচার রুখতে রাজ্যজুড়ে অভিযান চালিয়েছে সিবিআই। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে তল্লাশি চলেছে বুধবার। গরু পাচারে নাম জড়ানো এক বিএসএফ কর্নেলের বাড়িও সিল করা হয়েছে। এই ঘটনাকে তীব্র কটাক্ষ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখলেন, “মানিব্যাগে ভরে গরুপাচার হয়নি বরং গরুপাচারের টাকা তৃণমূল নেতাদের মানিব্যাগে গিয়েছে।”
রাজ্যের সীমান্তবর্তি জেলাগুলি দিয়ে বাংলাদেশ গরু পাচার করার অভিযোগ বহুদিনের। উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ-সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক সীমান্তবর্তী জেলায় বসবাসকারী মানুষজন গরু পাচারকারীদের অত্যাচারে নাজেহাল। বুধবার সকাল থেকেই কলকাতার রাজারহাট, সল্টলেক, তপসিয়া, মুর্শিদাবাদ, বহরমপুর, লালগোলা, শিলিগুড়ি-সহ রাজ্যের ১৫ জায়গায় অভিযান চালায় সিবিআই।
এপ্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী লিখেছেন, “বাংলার গরু পাচার রাজ্যের পুলিশ ও শাসকদলের মদত ছাড়া হতে পারে না। বিএসএফ লুঠ করেছে বর্ডারে, গরু এসেছে ট্রাক ভরতি হয়ে জাতীয় ও রাজ্য সড়ক দিয়ে। মানি ব্যাগে ভরে তো গরু পাচার হয়নি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘বরং গরু পাচারের টাকা তৃণমূলের নেতার নির্বাচনী তহবিল আর পুলিশের মানি ব্যাগ ভরিয়েছে। তৃণমূল নেতারা কত করে মাসোহারা পেত সেই রেট পুলিশ যেমন জানে তেমন পাবলিকও জানে। মুর্শিদাবাদে এটা ওপেন টু অল, যারা ক্ষমতায় থাকে পাচারকারীদের কাছে তাদের কদর। কলকাতা পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে ‘দিদি’র দলের ভবিষ্যৎ, তাদের জন্য টাকার পাহাড় তৈরিতে গরুপাচার বিরাট ভূমিকা পালন করেছে।”
উল্লেখ্য, বুধবার সল্টলেকের সিটি সেন্টার টু’র পাশেই বিএসএফের কমান্ড্যান্ট সতীশ কুমারের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়।বর্তমানে ওই বিএসএফ কমান্ড্যান্ট কর্মসূত্রে কর্ণাটকে থাকেন। তবে সূত্রের খবর, এর আগে সীমান্ত এলাকায় কাজ করতেন তিনি। সেই সময় গরু পাচারের ক্ষেত্রে নানাভাবে সাহায্য করেছিলেন সতীশ কুমার। তাঁর বাড়ি থেকে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।
যা তদন্তে নতুন ককে দিশা দেখাতে পারবে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তল্লাশির পর এদিন তাঁর বাড়ি সিল করা হয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে এখনও গরু পাচারের একটি বড় টিমকে মদত দিতে সতীশকুমারই ভরসা। নিয়মিত টাকা পান তিনি। নজরে ছিল সবকিছু। সেইমতো বুধবার ১১০ জনের টিম ঢোকে রাজ্যে। অভিযান নিয়ে অবশ্য সরকারিভাবে কিছুই বলা হয়নি।
কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার নজরে ইমামুল হক নামে আরও এক পাচারকারী রয়েছে। গরু পাচার মামলায় এর আগে মুর্শিদাবাদ থেকে তাকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরে অবশ্য সে ছাড়া পায়। ইমানুল হককেই আবারও খুঁজছে সিবিআই। অফিসারেরা মনে করছেন, তার কাছ থেকেই মিলতে পারে আরও তথ্য। এর পেছনে বড় কোনও প্রভাবশালী মাথা যুক্ত আছে কিনা, তাও দেখা হচ্ছে। এদিন ইমামুলের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। সুত্র : কলকাতা ২৪x৭