
শেরপুরে সুরভি (৩০) নামে এক সেনাসদস্যের স্ত্রীর গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে শেরপুর সদরের মোল্লাপাড়া এলাকার বাসার সীমানাপ্রাচীর-সংলগ্ন স্থান থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, বুধবার (৭ অক্টোবর) রাতের কোনো একসময় দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে গেছে।
সুরভি শেরপুর পৌর শহরের মোল্লাপাড়া (মাঝিপাড়া) এলাকার মো. নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী। সেনাসদস্য নাজিম উদ্দিন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বর্তমানে আফ্রিকার সুদানে অবস্থান করছেন।
পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, প্রায় ১২ বছর আগে সদর উপজেলার চরশেরপুর নয়াপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে সুরভির সঙ্গে শ্রীবরদী উপজেলার আবদুল হালিমের ছেলে সেনাসদস্য নাজিম উদ্দিনের বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুটি কন্যাসন্তান আছে। এক বছর আগে নাজিম উদ্দিন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্য হিসেবে সুদানে যান। এক সপ্তাহ পর তার দেশে ফেরার কথা। ৩ বছর আগে শহরের কসবা মোল্লাপাড়া এলাকায় জমি কিনে হাফবিল্ডিং বাসা করে সেখানেই বসবাস করে আসছিলেন নাজিম আহমেদ। সুরভি তার দুই মেয়ে নাদিয়া (৮) ও আলোকে (৪) নিয়ে বাসায় থাকতেন। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুর্বৃত্তরা সুরভির বাসার বিদ্যুতের লাইন কেটে দেয়। এ সময় দুই মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে সুরভি ঘর থেকে বের হয়ে প্রতিবেশী সেলিম মাস্টারকে তার বাসায় বিদ্যুৎ না থাকার বিষয়টি জানান। এরপর থেকে সুরভির কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। পরে বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে বড় মেয়ে নাদিয়া ঘুম থেকে উঠে তার মাকে বাসার সীমানাপ্রাচীর-সংলগ্ন স্থানে পড়ে থাকতে দেখে। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। সংবাদ পেয়ে সদর থানা-পুলিশ এসে সুরভির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে।
বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন পাওয়া গেলেও বাড়ির কোন জিনিস খোয়া যায়নি বলে জানান স্থানীয়রা।
নিহত সুরভির চাচা মোশারফ হোসেন বলেন, কেন তার ভাতিজিকে খুন করা হলো, সেটা তারা বুঝতে পারছেন না। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করবেন বলে জানান তিনি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নিহত নারীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত করছে ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে লাশ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম ও জামালপুরের পিবিআই, র্যাব ও সিআইডির কর্মকর্তারা।