
প্রচণ্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই সময়ে ঘেমে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। স্বস্তি মেলেনা কোথাও। তবে গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে পারে খাবার-দাবার। গরমের মৌসুমে বাজারে যেসব সবজি পাওয়া যাচ্ছে তাতেই সুস্থ্য থাকা সম্ভব। আর এর মধ্যে ১১টি সবজির নাম দেয়া হলো যেগুলে খেয়ে গরমে পেতে পারেন স্বস্তি-
১। লাউ : লাউ পটাসিয়াম, সোডিয়াম ও ভিটামিন সি তে সমৃদ্ধ। এছাড়াও এতে ৯০% পানি থাকে। এজন্য লাউ খেলে শরীরে শীতল ও শান্ত প্রভাব পড়ে। ঘামের কারণে শরীরে যে পানির ঘাটতি হয় তা পূরণে সাহায্য করে লাউ।
২। শশা : শশাতে ৯৬% পানি থাকে। তাই এই গরমে শশা খেলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে। এই সবজিটি ফাইবারে সমৃদ্ধ এবং এতে ক্যালোরি খুব কম থাকে। তাই স্ন্যাক্স হিসেবে শশা খেতে পারেন অথবা সালাদ হিসেবে অন্য সবজির সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন।
৩। সবুজ শাঁক : সবুজ শাঁকের মধ্যে পালং শাঁকের কথাই সবচেয়ে আগে বলতে হয়। কারণ এটি ফাইবার ও ভিটামিনে ভরপুর যা হজম সহায়ক ও গ্রীষ্মের তাপ মোকাবিলায় সাহায্য করে।
৪। ঝিঙ্গা : ঝিঙ্গা শুধুমাত্র সুস্বাদুই না অনেক পুষ্টিকর ও, বিশেষ করে গরমের দিনের জন্য উপকারি সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণে পানি, ফাইবার ও পটাসিয়াম থাকে, যা দেহের ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।
৫। বাঁধাকপি : গ্রীষ্মে পানিশূন্যতা ও বদহজমের দুর্দশা দূর করতে সাহায্য করে বাঁধাকপি। এতে প্রচুর ফাইবার থাকে ফলে পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে অনেক বেশি খেয়ে ফেলা থেকে বিরত রাখে।
৬। ধুন্দল : এটি লাউ এর মতোই একটি সবজি। ব্রোকলি ও ডালিমের সাথে ধুন্দল মিশিয়ে সালাদ হিসেবে খেলে চমৎকারভাবে ক্ষুধা নিবারণ করতে পারে। ধুন্দল হারিয়ে যাওয়া পুষ্টির পুনরুদ্ধারে ও শরীরকে জলপূর্ণ রাখতে সাহায্য করে।
৭। মূলা : মূলা কখনোই তার প্রাপ্য প্রশংসাটি পায়না। মূলাতে প্রচুর পরিমাণে পানি ও ভিটামিন সি থাকে। মূলাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান থাকে। এছাড়াও মূলা পটাসিয়ামের একটি ভালো উৎস যা কিডনি পাথর ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। অন্যান্য খনিজ উপাদান যেমন- সালফার, আয়রন এবং আয়োডিন ও থাকে মূলাতে।
৮। পুদিনা : পুদিনাতে আশ্চর্যজনক শিতলীকারক উপাদান আছে। পুদিনার প্রাণবন্ত সুবাস গরমের আলস্য দূর করতে পারে। এজন্যই ভেষজ বিভিন্ন ধরণের ঔষধ যেমন- হারবাল টি, বাম, অয়েন্টমেন্ট তৈরিতে পুদিনা ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। এছাড়াও পুদিনা বদহজম ও ইনফ্লামেশন দূর করতে সাহায্য করে।
৯। চিচিঙ্গা : দেহের তরল উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে চিচিঙ্গা। হৃদরোগীদের জন্য অনেক উপকারি চিচিঙ্গা। বুক ধড়ফড় করা ও শারীরিক পরিশ্রমের ফলে সৃষ্ট বুকে ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে চিচিঙ্গা পাতার রস। দেহে শীতল প্রভাব দান করে চিচিঙ্গা।
১০। মিষ্টিকুমড়া : কুমড়াতে শিতলীকারক ও মূত্রবর্ধক উপাদান আছে। হজমের সমস্যা দূর করে ও অন্ত্রের ক্রিমি ধ্বংস করতে পারে মিষ্টিকুমড়া। রক্তের সুগার লেভেলের ভারসাম্য রক্ষা করতে ও অগ্নাশয়কে উদ্দীপিত সাহায্য করে মিষ্টিকুমড়া। এছাড়াও এতে প্রচুর পটাসিয়াম ও ফাইবার থাকে। এটি রক্তচাপ ও ত্বকের রোগ সারাতেও সাহায্য করে।
১১। করলা : করলা ছত্রাকের সংক্রমণ, দাদ, ফুসকুড়ি ও ফোঁড়া ভালো করতে সাহায্য করে। এটি হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি কর।
দক্ষ পুষ্টিবিদ ও ডায়েটেশিয়ান দীপশিখা আগরওয়াল এর মতে, মেথি খাওয়া এড়িয়ে যেতে হবে কেননা মেথি শরীরের তাপ বৃদ্ধি করে। যার ফলে অবস্থা আরো খারাপ হয়।