
এবার মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা দেয়া লাগবে না কাউকেই। সেই সাথে নভেম্বরেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এবার পরীক্ষা না নিয়েই ওপরের শ্রেণিতে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘কোনো পরীক্ষা নয়, এবারের যে পরিস্থিতি, কোনো পরীক্ষা নয়। এবার কোনো বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে না। তবে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পূরণের জন্য ৩০ কর্মদিবসে শেষ করা যায় এমন একটি সিলেবাস এনসিটিবি প্রণয়ন করেছে। ওই সিলেবাসের আলোকে শিক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহে একটি করে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে।’
শিক্ষার্থীদের পরের ক্লাসে ওঠার ক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্টের মূল্যায়নের যে কোনো প্রভাব থাকবে না, সা স্পষ্ট করে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘এই মূল্যায়নের মাধ্যমে যেন কোনো চাপ সৃষ্টি করা না হয়। এই মূল্যায়ন শুধুমাত্র আমাদের বোঝার জন্য যে শিক্ষার্থীদের কোথায় কোথায় দুর্বলতা আছে, সেগুলো পরের ক্লাসে কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা করব।’
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ার পর গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে কওমি মাদ্রাসা ছাড়া অন্যসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা আছে। তবে নভেম্বরেও যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে না, সেই আভাস দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে অবস্থা তাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে যেখানে খুলেছিল অধিকাংশ জায়গায় সেখানে বন্ধ করার পর্যায়ে আছে। আমরা যখন মনে করব যে আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই বা খুবই সামান্য, হয়তো বা যে রিস্কটুকু নেওয়া সম্ভব, সে রকম একটা অবস্থায় যদি যায়, তখন আমরা খুলতে পারব। সেটি কবে হবে সেটি আমাদের কারো পক্ষেই এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।’
পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি না হওয়ায় এবার পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনী পরীক্ষা যে হবে না, সে কথা সরকার আগেই জানিয়েছিল। আর এইচএসসি পরীক্ষা না নিয়ে অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা হবে বলেও ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে। তবে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়ে সেজন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আমি বলব, যাদের সামনের বছর এসএসসি ও এইচএসসি আছে, তারা অবশ্য অবশ্যই নিজেরা নিজেদেরৃ সবার কাছে বই আছে, যতদূর সম্ভব অনলাইনে অ্যাকসেস করবেন। সমস্ত ক্লাসগুলো আছে আপনারা আপনাদের পড়াশোনাগুলো চালিয়ে যান। কারণ পরীক্ষা যদি কিছুদিন পরেও হয়, সময়মত হয়ত করার আমরা চেষ্টা করব, সময়মত হলে তো হলই, না হলে যদি কিছুদিন পরেও হয় তাহলেও কিন্তু পরীক্ষা হবে। সেক্ষেত্রে আপনাদের প্রস্তুতিটি ভালোভাবে নিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’
নভেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে কি না, সেই প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কী মনে হয়? এখন পর্যন্ত যে অবস্থা তাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে যেখানে খুলেছিল অধিকাংশ জায়গায় সেখানে বন্ধ করার পর্যায়ে আছে। যেহেতু শীতকাল নিয়ে একটা দুশ্চিন্তা আছে সব জায়গায়, বিশেষজ্ঞ মহলও বলছে। সে কারণে আমাদের কোভিড বিষয়ক যে জাতীয় পরামর্শক কমিটি রয়েছে আমরা তাদের সাথেও আলাপ-আলোচনা করব।