
করোনা মহামারির এই সময়ে সম্মুখ সারির যোদ্ধা বলা হয় করোনা রোগীদের সেবা দেওয়া চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের। তাদের উৎসাহ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দেন। অথচ প্রায় সাত মাসের বেশি সময় পার হলেও কোনও চিকৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী কেউই সেই প্রণোদনার টাকা পাননি বলে মিডিয়ায় খবর বের হয়েছে।
প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, একাধিক কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে কাজ করা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, আমরা কেউ প্রণোদনার জন্য কাজ করিনি। কিন্তু যখন সেটা সরকার প্রধান ঘোষণা দেন, তখন খুব আনন্দের বিষয় যে, আমাদের কথা রাষ্ট্র ও সরকার মনে রাখছে। কাজের স্বীকৃতি এভাবে হলেও দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা কেউই প্রণোদনার সেই টাকা পাইনি। করোনাযুদ্ধে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের এমনিতেই সম্মুখ সারির যোদ্ধা বলা হয় না, এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। পেশাগত দায়িত্ব পালন করার জন্য একজন স্বাস্থ্যসেবা কর্মীকে করোনাভাইরাস আছে এমন পরিবেশে থাকতে হয়। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সরকার প্রথম থেকেই স্বাস্থ্য খাতে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে কোনও কার্পণ্য করেনি। অথচ কোন কারণে, কোথায় এই প্রণোদনার টাকা আটকে রয়েছে, সেটা খুঁজে দেখার সময় এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৭ এপ্রিল এক ভিডিও কনফারেন্সে বলেছিলেন, ‘মার্চ মাস থেকে যারা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করছেন, আমি তাদের পুরস্কৃত করতে চাই। সরকার তাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেবে। এছাড়া দায়িত্ব পালনের সময় কেউ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে তাদের জন্য ৫-১০ লাখ টাকার একটি স্বাস্থ্যবিমা থাকবে। কেউ মারা গেলে স্বাস্থ্যবিমার পরিমাণ পাঁচগুণ বেশি হবে। এগুলো মার্চ মাসের পর থেকে যারা জীবন বাজি রেখে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে কাজ করছেন, তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পরও সেই প্রণোদনার টাকা আটকে রয়েছে। এ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্ট ছিল চিকিৎসকদের প্রণোদনা এটা হবেই। যে যা পাওয়ার সেটা তিনি পাবেনই। যে প্রসেসে পাওয়ার কথা, আবেদন করলেই পাবেন।’ আমরা আশা করবো বিষয়টির দ্রুত সুরাহা হবে।