শহীদ আব্দুস সালামের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চাই তার একমাত্র মেয়ে খাদিজা পারভীন ঝরনা। শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার পিতার নাম অন্তভূক্তির দাবি জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়েও আবেদন করেছেন খাদিজা পারভীন। তিনি মণিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামের আয়ুব হোসেনের স্ত্রী খাদিজা পারভীন ঝরনা।১৯৭১ সালে আব্দুস সালাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। এরপর আব্দুস সালাম স্থানীয় যুবকদের মুক্তিযোদ্ধায় অংশ গ্রহন করার জন্য উদ্ধু করতেন। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে রাজাকার ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শহীদ জামাল, মাষ্টার জামাল উদ্দিন ও আব্দুস সালাম বিশ্বাসকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর নেংগুড়াহাট, রাজগঞ্জ ও মণিরামপুর রাজাকার ক্যাম্পে আটক রেখে তাদেরকে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। সাতদিন ক্যাম্পে নির্যাতন করার পর আব্দুল সালামকে মণিরামপুর বাঁধাঘাটা ব্রীজের উপর দাড় করিয়ে গুলি করে নির্মম ভাবে হত্যা করে পাক-বাহিনী। এরপর তার বাড়ি-ঘর আসবারপত্র ও কাগজপত্র আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ দৃশ্য দেখে আব্দুস সালামের স্ত্রী জাহানারা খাতুন একমাত্র মেয়ে খাদিজা পারভীন ঝরনাকে নিয়ে পিতার বাড়িতে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যান। তার একমাত্র ভাই ইসমাইল হোসেন ভাইয়ের শোকে পাগল হয়ে গ্রাম ছেড়ে খুলনায় পালিয়ে যান। এমনকি সন্তান হারানো শোকে আব্দুস সালাসের পিতা এনায়েতুল্ল্যা মা অসুস্থ্য হয়ে কয়েকদিন পর মারা যায়। এরপর দেশ স্বাধীন হলে অনেক মুক্তিযোদ্ধার শহীদ তালিকায় নাম অন্তভূক্ত হলেও আব্দুস সালামের নাম তালিকায় উঠেনি।
এ ব্যাপারে শহীদ সালামের একমাত্র মেয়ে খাদিজা পারভীন ঝরনা জানান, পিতার মুত্যুর সময় তার বয়স ছিল আড়াই মাস, বঞ্চিত হয়েছি পিতার আদর-মায়া মমতা ও ভালবাসার। নিজেই ছোট বেলায় ভাটা মালিক বাবর আলীর বাসায় কাজ করে বড় হয়েছি। বর্তমানে বাড়িতে সংসার করছি।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আলাউদ্দিন ও ডেপুটি কমান্ডার গাজী আব্দুল হামিদ জানান, আব্দুস সালাম দেশ স্বাধীন করার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় কারণে রাজাকাররা তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানোর পর গুলি করে নির্মম ভাবে হত্যা করে। তার ঘর-বাড়ি পর্যন্ত পুড়িয়ে দিয়ে ছিল।