
বিভিন্ন সেবায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ালে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা গেলে, বিআরটিসিকে লাভজনক করা সম্ভব বলে মনে করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গাবতলী ট্রেনিং সেন্টার উদ্বোধনের সময় এই প্রত্যাশার কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন,‘বিআরটিসির বহরে সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকার ৬শ বাস এবং ৫শ ট্রাক যুক্ত করেছে। বর্তমানে বহরে বাস সংখ্যা ১৮শ’র বেশি। চলমান বাসের সংখ্যা সাড়ে তেরশ। তাহলে প্রায় ৫শ বাস ডিপোতে বসে আছে,হয় মেরামত চলছে, না হয় নষ্ট হয়েছে। এত বিশাল সংখ্যক বাস যদি আমরা চালাতে না পারি তাহলে কিভাবে লাভের মুখ দেখবো? যা আয় তাতো মেরামত নামক কুমিরের মুখে চলে যাচ্ছে। তার ওপর অনিয়মের অভিযোগতো আছেই।’
আমি চেয়ারম্যানকে যেসব বাস চালানোর উপযোগী নয়,তার ওপর একটি কম্প্রিহেনসিভ প্রতিবেদন দেওয়ার অনুরোধ করছি। যেন তেন নয়,প্রয়োজনে অটোমোবাইল প্রকৌশলীদের মতামত নিন। অনেক ব্যয় করে মেরামত করলেন,দুই মাস যেতে আবার ডিপোতে বসিয়ে রাখতে হয়,তাহলে লাভ কী হলো। মেরামতের টাকাওতো উঠলো না। এসব বিষয় আমাদের ভাবতে হবে,বলেন মন্ত্রী।
বিআরটিসির ভাগ্য বদলানোর জন্য চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন,‘আপনি লোকসান কমিয়ে আনার প্রয়াস শুরু করেছিলেন। করোনা এসে ধারাবাহিকতায় ছন্দপতন ঘটালেও হাল ছাড়বেন না। কোনো অনিয়ম প্রশ্রয় দিবেন না। সরকার এ প্রতিষ্ঠানকে একটি জনবান্ধব এবং সেবাবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চায়। সবার আন্তরিক চেষ্টায় বিআরটিসি আবার লাভের ধারায় ফিরবে,কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ নিজ পাওনা নিয়ে বাড়ি ফিরবে হাসিমুখে এটাই হোক আমাদের সবার এ প্রত্যাশা।’
পরে তিনি গাবতলী টার্মিনালে গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণে নবনির্মিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে বিআরটিসির কার্যক্রম তুলে ধরে প্রকাশিত বার্ষিক ‘বিআরটিসি সমাচার’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন।
দক্ষ ও প্রশিক্ষিত গাড়িচালকের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন ‘বিআরটিসি পরিবহন সেবার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত গাড়ি চালক তৈরির কাজটিতে মনযোগী হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায়, গাবতলী টার্মিনাল এলাকায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে।
দক্ষ চালক তৈরি তথা অদক্ষ চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়নে সারা দেশে বিআরটিসির আওতায় ৩টি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও ১৭টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আধুনিকায়ন ও শক্তিশালী করার জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
দেশে দিন দিন গাড়ি চালনায় নারীদের আগ্রহ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ খাতে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি। বিআরটিসির মহিলা বাস সার্ভিস,স্কুল বাস সার্ভিসে আমরা শতভাগ নারী চালক ও সহকারীদের সম্পৃক্ত করতে পারি। বিআরটিসির চালক নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী গাড়িচালকদের নিয়োগসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে আমাদের এক্ষেত্রে পলিসি সাপোর্ট দিতে হবে।’
বিআরটিসির বাস লিজ নেওয়ার পর বাসের রক্ষণাবেক্ষণ বা যত্নের বিষয়ে অনেকের উদাসীনতার ব্য়িটি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন,‘বাস যদি ঠিক না থাকে তাহলে রাজস্ব আসবে কোথা থেকে। ’