
এবার বই উৎসব হচ্ছে না। নতুন বছরের প্রথম দিন উৎসবের মধ্য দিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতাও এবার মহামারীর কারণে বাতিল করা হয়েছে। বিকল্প উপায়ে প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছে দেওয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছেন।
এদিকে, করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দিতে বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আসেন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানেই বই নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উৎসব না করার কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিচ্ছে। গত ১১ বছরে ৩৬৬ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ৫৬৬টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
দীপু মনি জানান, ‘বই তৈরি থাকবে। তবে যেভাবে বই উৎসব করি, যেখানে সব শিক্ষার্থী হাজির থাকে, এবার স্বাভাবিক কারণে, স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে নিশ্চয় আমরা সমাবেশ করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারব না। বিকল্প চিন্তা করে কীভাবে প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়া যায় সেই বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করব।
মন্ত্রী বলেন, ‘উৎসব গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেই উৎসব করতে গিয়ে বড় একটা স্বাস্থ্যঝুঁকি আমরা নিয়ে নেব, সেটি বোধহয় সঠিক হবে না। বিকল্প কীভাবে করতে পারি সেটি আমরা জানিয়ে দেব।
বাংলাদেশে করোনাভাইসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। কওমি মাদ্রাসা বাদে অন্যসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা ছিল। সেই ছুটি ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর কথা এদিন সংবাদ সম্মেলনে জানান শিক্ষামন্ত্রী। মহামারীর মধ্যে এবার পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনী পরীক্ষা এবং মাধ্যমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষা নেবে না সরকার। পরীক্ষা ছাড়াই সব শিক্ষার্থী পরবর্তী শ্রেণিতে উঠে যাবে। এছাড়া অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসি ও সমমানের ফলফলের ভিত্তিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হবে বলে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ছুটি বাড়ানো প্রসঙ্গে বলেন, ‘সবার স্বাস্থ্য ঝুঁকিকে বিবেচনায় নিয়ে গত মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে আমরা বাধ্য হয়েছি। আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এই সময়ের মধ্যে নানান জিনিস পর্যালোচনা করেছি, সীমিত পরিসরে কিছু জিনিস খোলা যায় কি না। আমাগী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে দেখব পরিস্থিতি অনুকূল হলে সীমিত পরিসরে (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) খোলার চেষ্টা করব।’