
আজ শুক্রবার শ্রী শ্রী কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা। ধন-সম্পদ-ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মী পূর্ণবতী হয়ে পৃথিবীতে আসবেন। দশভূজা দেবী দুর্গার বিদায়ের ব্যথা ভুলে শুক্রবার আবার আনন্দে মেতে উঠবেন বাঙালি সনাতন ধর্মবিশ্বাসীরা। ধর্ম, কর্ম, অর্থ ও মোক্ষ এই চারটি হাতের আশীর্বাদে লক্ষ্মী ধন্য করবেন ভক্তদের। তার কৃপার আশায় ঘরে ঘরে ধ্বনিত হবে ‘ওঁ বিশ্বরূপস্য ভার্যাসি পদ্মে পদ্মালয়ে শুভে। সর্বতঃ পাহি মাং দেবি মহালক্ষ্মী নমোহস্ততে।’
গ্রন্থানুসারে দেবী লক্ষ্মী শুধু ধনই দেন না। ষোল প্রকার সম্পদ প্রদান করেন তিনি। এই সম্পদ গুলো হলো খ্যাতি, জ্ঞান, সাহস ও শক্তি, জয়, সুসন্তান, বীরত্ব, স্বর্ণ, অন্যান্য রত্নরাজি, শস্য, সুখ, বুদ্ধি, সৌন্দর্য, উচ্চাশা, উচ্চভাবনা, নৈতিকতা, সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন। এককথায় লক্ষ্মী পূজা করলে মানুষ সার্বিকভাবে সুন্দর ও চরিত্রবান হয়। শারদীয়া দুর্গোৎসব শেষে প্রথম পূর্ণিমা তিথিতে ঘরে ঘরে সৌভাগ্য ও ধন সম্পদের দেবী লক্ষ্মী পূজা হয়। আশ্বিন মাসের কোজাগরী পূর্ণিমায় দেবী আরাধনার পাশাপাশি প্রতি বৃহস্পতিবার সধবা স্ত্রীগণ তাদের ঘরে লক্ষ্মীর পূজা করেন। বিভিন্ন পঞ্জিকা মতে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার পর পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে। যা চলবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। পণ্ডিতদের মতানুসারে পূর্ণিমার নিশিপালন ও শ্রী শ্রী কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা শুক্রবার। তবে পূর্ণিমা তিথি চলায় শনিবার দিনেও পূজা করবেন অনেকে।
মঙ্গলঘট, ধানের ছড়ার সাথে শুক্রবার ঘরে ঘরে শোভা পাবে বাহারী আল্পনা আর লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ। ধন-সম্পদের আশায় সনাতন ধর্মানুসারীরা উপবাস থেকে লক্ষ্মীর পূজা করবেন। চিড়া, মুড়ি, মুড়কি, নাড়ু, ফুল, ফল, মিষ্টি নৈবেদ্য দিয়ে আরাধনা হবে, দেবেন পুষ্পাঞ্জলি।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যশোরের বিভিন্নস্থানে পূজার উপকরণ কিনতে দেখা গেছে পূজা করতে উদ্যোগীদের। বড় বাজার, কাপুড়িয়াপট্টিসহ পাড়া মহল্লায় পূজা উপলক্ষে অন্যতম প্রধান অনুসঙ্গ পদ্ম ফুল বিক্রি করতে দেখা গেছে মৌসুমী ফুল বিক্রেতাদের। এ ছাড়াও ভাসমান ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন দোকানের সামনে পূজার বিভিন্ন উপকরণ বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাঁশের কঞ্চি, বেলপাতা, ধানের গোছা, কলার ছোট গাছ, হলুদ গাছ, দূর্বা, লালচেলি, সোলার ফুলসহ নানা উপকরণের জন্যে ক্রেতা আকর্ষণ ছিল অনেক বেশি। বিভিন্ন প্রতিমালয় থেকে লক্ষ্মী প্রতিমা নিয়ে যেতেও দেখা গেছে অনেককে।