
দেশের তথ্য দেশে রাখতে ডাটা প্রাইভেসি প্রটেকশন আইন করার কথা ভাবছে সরকার। এখনই না হোক আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে এ ব্যাপারে দৃশ্যত রুপ দেখা যাবে। গুগোল ফেসবুকসহ আরো কয়েকটি প্রযুক্তি কোম্পানীর মাধ্যমে বাংলাদেশের গুরুত্ব সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সেক্টরের তথ্য চলে যাচ্ছে দেশের বাইরে। এছাড়া এদেশের মানুষের বিশাল অংকের টাকাও চলে যাচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেশে নিজেদের কোনো ব্যাকআপও নেই অনেক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের। যে কারণে তথ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডাটা রিকভারি সাইটের বিকল্প নেই।
২৯ অক্টোবর দুপুর ১২ টায় ৪৯ বিজিবি যশোরের ডাটা সেন্টার ডিজাস্টার রিকভারি সাইটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব তথ্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এছাড়া মিট দ্যা প্রেসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পলক বলেন, ডাটা সংরক্ষণের মাধ্যমে আগামী অল্প সময়ের মধ্যে আত্ম নির্ভরশীল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। সরকারি তত্ত্বাবধানে আগারগাঁও আইসিটি টওয়ার, সি আর ফের ডাটা সংরক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। পাশাপাশি বিজিবির এই ডাটা সেন্টার ডিজাস্টার রিকভারি সাইটটিও অত্যাধুনিক এবং ডাটা ধারণ ক্ষমতাও বেশি। সীমান্ত ব্যংকের ডাটা সংরক্ষণ ছাড়াও বিজিবির অভিযানিক কার্যক্রমকে আধুনিক যুগোপযোগী ও গতিশীল করতে এই সাইটটি বিশেষ কার্যকর হবে। তেমনি দেশের বিভিন্ন ব্যাংক, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তাদের ডিজিটাল ডাটা এই সাইটে সংরক্ষণ করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিজিবির মহা পরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম বিজিবিএম (বার) এনডিসি পিএসসি। উপস্থিত ছিলেন ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল কমান্ডিং অফিসার, বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বৃন্দ, আইটি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও বিভিন্ন ফিনান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে বিজিবির এই ডাটা সাইটের নানা তথ্য তুলে ধরা হয়। দেশের ভৌগোলিক অবস্থা বিবেচনা করে ভূমিকম্প জলোচ্ছ্বাসের আশংকার বিষয়টির গুরুত্ব দেয়া হয়। ভিন্ন ভিন্ন ভূগর্ভস্ত সিসমিক প্লেট পর্যালোচনা করে বিজিবির যোগাযোগ শাখা এই নির্মাণ যশোরে করার ব্যাপারে ব্যখা দেয়। যশোরে ভূমিকম্প না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকায় বিজিবি সদর দপ্তর ৪৯ বিজিবি যশোরে ২০১৭ সালের ৬ মার্চ আধুনিক মানের একটি ডাটা সেন্টার স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি ডাটা সেন্টারে বিভিন্ন সেকশনের পরীক্ষাধীন কার্যক্রম শুরু হয়। ওই বছরে ১ অক্টোবর এই ডাটা সেন্টার থেকে সীমান্ত ব্যাংকে লোকেশন সার্ভিস প্রদান শুরু হয়। সীমান্ত ডাটা সেন্টার বিজিবির নিজস্ব ডোমেইন থেকে ব্যবহার করে ওয়েবসাইট রক্ষণাবেক্ষণ শুরু করে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পেক্ষাপটে বিজিবির এই ডাটা সাইটটি একটি অনন্য মাইল ফলক। বিজিবির জন্য এটি একটি বিশাল সাফল্য। দেশের অন্যান্য সংস্থার সাথে তুলনা করলে এই ডাটা সাইটটি মাইল ফলক হিসেবে এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে বিজিবিকে।
অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, দূর্যোগ বা দুর্ঘটনায় এই ডাটা সেন্টার ডিজাস্টার রিকভারি সাইটে অধিক নিরাপত্তার সাথে সুরক্ষিত হবে। বিজিবির সদর দপ্তরের নিজস্ব আইটি বিশেষজ্ঞ টিম এই বিরল কাজটি করেছেন। এতে কোনো বিদেশি এক্সপার্ট আনা হয়নি। আশা করা হচ্ছে, অধিক নিরাপত্তার সাথে বিজিবির সকল ডাটা সংরক্ষণ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন সেক্টর ও প্রতিষ্ঠানের ডাটা সংরক্ষণ করা যাবে। এই সাইটটির সুফল হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।