
কয়দিন ধইরেই জাড়ে মিসকল দিচ্চিলো। কালকেত্তে ডাইরেট কল দেচে। রাত্তিরি কুয়ো পড়তিলো কয়দিন ধইরে। হটাস কইরে জাড় চইলে আইয়েচে হুড়মাড় কইরে। রাত্তিরি ঘুমাতে যাইয়ে জাড়ের কচনে মনে হচ্চিল হাত পা আড়ায় আইসতেচে। ভাবলাম পিসার মনে হয় নো হইয়ে গেচে। আস্তের আস্তের বাইরে আসতিই কম্ম কাবার। জাড়ের যে ফুক্ক বাতাস মাড়িল তাতে পাইসো হওয়ার জুগাড়।
যত জাড়ই পড়ুক তাতে আমার কিচু কত্তি পারে না, শুদু কাপানিতেই যা পাইড়ো কইরে দেয়। রস নেই, গুড় নেই, পিটে মাটা নেই, শুদু জাড় কিরাম যেন আনকা ঠেকে। এ সব কতা গেলি বাড়িত্তেও দেড়ি কতা শুনতি হয়। কুটি কালেত্তে দেকি আসতিচি জাড় পড়ার আগেত্তে মা চাচীগের পা’র সুতো কাইটে গেচে ঢেকিতি পাড় দিতি দিতি। নতুন ধানের গুড়ো কুটা আর তার সাতে নতুন কলই’র ডাল কুটায় ব্যস্তর থাকতেন তারা। পিটে মাটা আর কুমড়ো বড়ির ধুম পইড়ে যাইতো গিরামের বাড়ি বাড়ি। বিয়েন বেলা গাছেত্তে রসের ভাড় উলায় আনলি পাটকাটির নল, আর বাড়ি ভাজা মুড়ি টিনির গিলাসে নিয়ে ছাবাল মাইয়েরা দাড়ায় থাইকতো। ভাড়ের মুকি পাতলা ফিরফিরে কাপড় বাইন্দে রস ছ্যাকা হইতো। ভাড়েত্তে ছ্যাকা রস ঢ্যালা হইতো টিনির জগে। স্যানতে বাড়ি স¹লির জন্যি গিলাসে গিলাসে ভাগ কইরে দিয়া হইতো। রোইদ পিট কইরে ফিড়েয় বইসে পাটকাটির নল দিয়ে সেই রস চুকচুক কইরে খাওয়া কতা মনে উটলি জানের মদ্দি বুকোয় যায়। কাচা রস খাওয়ার পর দেড়ি রস উটোনের কান্দায় খুচা বানের ওপরে জালোইতি কইরে জালানো হইতো। তাত রস দিয়ে ভিজোনো হইতো কাচি পুড়া পিটে। আর বাকিডা জালায়ে পাটালি আর গুড় বানানো হইতো।
এই সব কতা লিকচি আর জানের মদ্দি কাইন্দে দেচ্চে। রস তো দূরি থাক একনো গাছই তুলা হয়নি বহুত জাগায়। আর একনকার ছিলেপিলের কাচে পিটে মানে পিলাস্টিকির ঠুঙায় ভরা কেক আর হরকোলি চিপ। দুকানে দুকানে ঝোলচে খালি ক্যাশে টাকা দিয়ে ঠুঙায় টান দিতি যট্টুক সুমায়। জাড় আসলি রাত্তিরি দলিজ ঘরের হাইতনেই বইসে বাউল আর পালাগান শুনার জন্যি আইজও মনডা আনচান করে। এ সব ছাড়া শুধু জাড়ে নিজিরি এতিম মনে হয়।
ইতি-
অভাগা আক্কেল চাচা
০১৭২৮৮৭১০০৩