
রাজশাহীর বেসরকারি শাহমখদুম মেডিকেল কলেজ বন্ধের সরকারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। তারা এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের অন্য প্রতিষ্ঠানে মাইগ্রেশন করে দেয়ার দাবি জানাচ্ছেন। তবে মেডিকেল কলেজটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটি টিকে থাকুক না হলে বেকার হয়ে পড়বেন ।
রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। একই সময় দ্রুত মাইগ্রেশনের দাবি জনানান শিক্ষার্থীরা। আর নগরীর আলুপট্টিতে মানববন্ধন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ডশক্ষার্থীরা জানান, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা লঙ্ঘন করায় শাহমখদুম মেডিকেল কলেজ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ২ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিবের স্বাক্ষর করা এই চিঠি গত বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) কলেজে এসে পৌঁছেছে। ওই চিঠিতে কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের রাজশাহী মেডিকেল বিশবিদ্যালয়ের অধীনস্থ বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে মাইগ্রেশন করার ব্যবস্থা করার জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শাহমখদুম মেডিকেল কলেজে ২০১৪ সাল থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়। বর্তমানে সাতটি ব্যাচে ২২৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন। তবে তারা এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্য প্রতিষ্ঠানে নিজেদের ভর্তির ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছেন।
এ দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রতিষ্ঠানটির সকল শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকেরা অংশ নেন। তারা বলেন, শাহমখদুম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতারিত হয়েছে। তাদের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা শেষ হলেও এখনও পর্যন্ত তাদের ইন্টার্নশিপ হয়নি। শুধুমাত্র ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানটি খোলা হয়েছিল। বাংলাদেশে আর যেন এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে না ওঠে। আর কেউ যেন প্রতারিত না হয়।
বক্তারা এ সময় প্রতারণার জন্য শাহমখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনের শাস্তি দাবি করেন। তারা বলেন, মনিরুজ্জামান স্বাধীন একজন আউলিয়ার নাম ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। কিন্তু তিনি সেখানে ইবলিশের মতো কার্যক্রম চালিয়েছেন। তার শাস্তি হওয়া উচিত। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্বাধীনের শাস্তির দাবিতে নানা শ্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা মানববন্ধনে বলেন, তারা সন্তানকে চিকিৎসক বানানোর স্বপ্নে প্রচুর টাকা দিয়ে শাহমখদুম মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করাচ্ছিলেন। কিন্তু সেখানে কোন পড়াশোনাই হয় না। শিক্ষার্থীরা কিছুই শিখতে পারে না। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত সঠিক। তবে তাদের সন্তানের জীবন যেন অনিশ্চিত না হয়ে পড়ে সে জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ব্যবস্থা করতে তারা সরকারের প্রতি দাবি জানান।
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- অভিভাবক আবদুর রউফ খান রতন, গোলাম ফারুক, প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী মামুনুর রশীদ, শিক্ষার্থী শাকিলা দিল আফরোজ মিষ্টি, রিয়াজুল হাসান, মেহেদী হাসান প্রমুখ। তারা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
এদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধনে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে গেলে তারা বেকার হয়ে পড়বেন। ফলে তাদের অসহায় জীবনযাপন করতে হবে। এ কারণে তারা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান।