
‘মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে’-মানবতাবাদীদের কাছে পরিচিত কথাগুলোকেই বাস্তবে প্রতিফলিত করে তুলেছেন আলী রেজা। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বাসিন্দা মানুষটি করোনাকালীন সময়ে নানাভাবে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। বাড়িয়ে দিয়েছেন সহানুভূতির হাত। না, আহামরি কোনো কিছু তিনি সাধারণের হাতে দিচ্ছেন না-দিচ্ছেন এমন কিছু যা এই আপদকালীন সময়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্যে খুবই প্রয়োজন। স্বল্প মূল্যের হলেও যা অনেকের কেনার সামর্থ নেই। নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়েই এই সামান্য চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন আলী রেজা।
মণিরামপুরের মাসনা খানপুরের বাসিন্দা আলী রেজার বর্তমান বাস উপজেলা শহরে। সেখানে মক্কা মদিনা ভ্যারাইটিস স্টোর নামে নিজের একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। আরব থেকে আনা খেজুর, আতর, টুপি, পাগড়ি, জায়নামাজসহ নানা ধরণের জিনিস বিক্রি করেন। রয়েছে একটি হজ এজেন্সিও। আহামরি কোনো ব্যবসা নয়, কিন্তু, যা রোজগার করেন তাতেই সন্তুষ্ঠ তিনি। এই স্বল্প আয় নিয়েই মহামারী করোনাভাইরাসের পর সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অসহায় মানুষের প্রতি।
আলী রেজা বলেন, ‘সমাজে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা অন্যের দয়ার ওপর নির্ভরশীল। সাধারণ ভাষায় এসব মানুষকে আমরা ভিক্ষুক বলি। সমাজের একেবারে তলানীতে পড়ে থাকা এসব মানুষ একবেলা অন্যের দূয়ারে যেতে না পারলে না খেয়ে মারা যাবেন। কিন্তু, তাদের স্বাস্থ্য সচেতনতার দিকে আমরা কেউই কোনো খেয়াল রাখি না। সেদিকটি বিবেচনা করেই আমি অসহায় এসব মানুষকে যথাসম্ভব সহায়তা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি’।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত তিনি প্রায় পাঁচশ’ জনকে মাস্ক, হ্যান্ডসেনিটাইজার সরবরাহ করেছেন। দিয়েছেন খেজুর, অন্যান্য খাবার ছাড়াও নগদ অর্থ। এটা সম্পূর্ণ নিজের টাকা থেকেই তিনি সরবরাহ করছেন জানিয়ে আলী রেজা বলেন, ‘সচেতন মানুষ হিসেবে এটা আমার নৈতিক দায়িত্ব। যতদিন বেঁচে আছি ততদিন এটা করে যাবো। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা’।