
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ছয় হাজারের বেশী জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। মারা যাওয়াদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ষাটোর্ধ্ব। ষাট বছরের বেশি বয়সী তিন হাজার ১৩২ জন মানুষ মারা গেছেন কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে। শতকরা হিসেবে যা মোট মৃত্যুর ৫২ দশমিক ১৭ শতাংশ। শুরু থেকেই বৃদ্ধ এবং অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্তরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিকিৎসকরা বলে এসেছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের বন্ধ হয়ে যাওয়া বুলেটিনে এবং এর আগে হওয়া করোনা বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে ৬০ বছর বয়সী এবং যারা অন্য জটিল রোগে আক্রান্ত, তাদের অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিহিত করা হয়। তাদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার কথাও পরিবারের অন্য সদস্যদের বলা হয়।
গত ২৭ আগস্ট কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি তাদের সভায় করোনার টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর কথা উল্লেখ করে। কমিটি বলে, যেহেতু প্রথমেই হয়তো দেশের সম্পূর্ণ জনসংখ্যার জন্য ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে, তাই উচ্চ ‘ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী’ বাছাই করে পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিন প্রদান করা যেতে পারে। কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বয়স্করা যেকোনও রোগের বেলাতেই সবসময় ঝুঁকিপূর্ণ। তারা আগে থেকেই নানান জটিল রোগে আক্রান্ত থাকেন। তারা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভোগেন। যার কারণে তারা স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল থাকেন এবং সহজেই কাবু হয়ে যান।’ গত ১৮ মার্চ করোনা ভাইরাসে যিনি প্রথম মারা যান তার বয়স ৭০-এর বেশি ছিল। তিনি বিদেশফেরত নন, তবে বিদেশ থেকে আসা এক আত্মীয়ের মাধ্যমে তিনি সংক্রমিত হয়েছিলেন। সংক্রমণের পর তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এছাড়া তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি সমস্যা ও হৃদরোগে ভুগছিলেন বলে জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। মৃত্যু তালিকায় বয়স বিবেচনায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সীরা। এই সংখ্যা এক হাজার ৫৮৩ জন, মোট মৃত্যুতে যার হার ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
করোনা ফের হানা দিচ্ছে। আসুন আমরা সবাই বয়স্কদের প্রতি বিশেষ নজর দেই। একই সাথে আসুন আমরা সবাই মাস্ক ব্যবহার করি, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলি।