যশোরে দ্বিতীয় দফায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম দফা অভিযানের পর সোমবার দ্বিতীয় পর্যায়ে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। সকাল ১০টা থেকে বেলা দু’টো পর্যন্ত শহরের বকচর এলাকা থেকে বারান্দীপাড়া (ঢাকা রোড ব্রিজ) মোড় পর্যন্ত সড়কের পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সওজ কর্তৃপক্ষ।
উচ্ছেদ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সড়কের সীমানা বজায় রাখতে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা প্রয়োজন অনুসারে ভাঙা হয়। অভিযানে দোকান, বসতবাড়ি, তেলপাম্প ও বিভিন্ন যানবাহনের গ্যারেজ ভাঙা পড়েছে। তবে মানবিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দু’একটি প্রতিষ্ঠানকে তাৎক্ষণিক বিবেচনায় নিজ দায়িত্বে সরে যাওয়ার জন্যে সময় বেধে দেয়া হয়। দু’ একটি বিচ্ছিন্ন আপত্তি ও অনুরোধের ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। শহরের মণিহার বাসস্ট্যান্ড, পুরাতন খুলনা বাসস্ট্যান্ড, ফলপট্টি, বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সামনের মার্কেট, বিসিএমসি কলেজ এলাকাসহ বারান্দিপাড়া ঢাকা রোড এলাকা পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের খুলনা জোনের এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী সচিব অনিন্দিতা রায়ের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে আরও অংশ নেন সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর যশোরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী-হাফিজুর রহমান, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন, পৌরসভার সার্ভেয়ার হাফিজুর রহমান এবং খোকন বিশ্বাস। সার্বিক সহযোগিতায় ছিল বিদ্যুৎ ও পুলিশ বিভাগ। অনিন্দিতা রায় এ কার্যক্রম সম্পর্কে গ্রামের কাগজকে জানান, আইনের পূর্ণ প্রতিষ্ঠায় কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর। যে সকল দখলদার নিজ দায়িত্বে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্থাপনা সরিয়ে নিতে পারেননি তবে কাজ চলাচ্ছেন তাদের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে সময় দেয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে তাদের স্থাপনা অপসারণ না করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আজ মঙ্গলবার উচ্ছেদ অভিযান চলবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আইন সবার জন্যেই সমান। সরকারি কাজে অবৈধভাবে বাধা দেয়ার এখতিয়ার কেউ রাখেন না। উচ্ছেদ অভিযান স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। সড়ক বিভাগ যশোর অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানাগেছে, যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ শহরের পালবাড়ি মোড় থেকে মুড়লি মোড় পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ সড়কের সীমানা চিহ্নিত করে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি সড়কে উচ্ছেদ অভিযান চালাবে বলে ঘোষণা দেয়। সে মোতাবেক তখন নির্ধারিত সময়ে উচ্ছেদ অভিযান চলে। দ্বিতীয় দফায় অভিযান পরিচালনার আগে গত ১২ নভেম্বর পুণরায় উচ্ছেদ অভিযানের গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে অবৈধ দখলদারদের নিজ দায়িত্বে তাদের স্থাপনা সরিয়ে ফেলার নিদের্শনা দেন। দ্বিতীয় দফায় প্রায় দুশ’ অবৈধ দখলদারকে নোটিশ প্রদানের পাশাপাশি লাল দাগ দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়। গণবিজ্ঞপ্তি পেয়ে অধিকাংশ দখলদার স্থাপনা সরিয়ে নিলেও অর্ধশতাধিত দখলদার তাতে কর্ণপাত না করায় তাদের স্থাপনা ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়।