
সারাদেশ যখন করোনার ছোবলে নাকাল, তখনই সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে লন্ডভন্ড হয় দেশের উপকূলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক জেলা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি ও গাছপালা। আম্ফানের সেই ক্ষতি এখনও পুষিয়ে উঠতে পারেননি ক্ষতিগ্রস্তরা। অনেকেই ঘরহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এসব গৃহহীন মানুষের জন্য এক হাজার ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী জানুয়ারির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত এক হাজার পরিবার দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ঘর পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পত্রিকান্তরে প্রকাশ, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহায়ন অনুদানের অর্থে মুজিববর্ষে এই এক হাজার ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২৫ জেলায় ঘরগুলো নির্মাণে ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরে জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে জেলাভিত্তিক ক্রসড চেকের (অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেক) মাধ্যমে ১৭ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকরা ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাসমূহের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও মাত্রা বিবেচনায় উপজেলাভিত্তিক গৃহের সংখ্যা নির্ধারণ করে ক্রসড চেকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) অনুকূলে অর্থ প্রদান করবেন। নির্মাণকাজ শেষের পর উপকারভোগীদের নামের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রদত্ত সংযুক্ত ছক মোতাবেক সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পাঠানো হবে। এরপর ইউএনও ‘যার জমি আছে ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ’ নীতিমালার আলোকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ঘর বানিয়ে দেবেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীনের জন্য গৃহ প্রদান নীতিমালা ২০২০-এ অন্তর্ভুক্ত নকশা অনুযায়ী এসব ঘর নির্মাণ করতে হবে।
এ প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাটে ২৫টি, বরিশালে ২৫টি, ভোলায় ১০টি, গোপালগঞ্জে ৫০টি, মাদারীপুরে ৫টি, ঝালকাঠিতে ৫টি, খুলনায় ২৪৯টি, লক্ষ্মীপুরে ৬টি, নোয়াখালীতে ৫টি, পটুয়াখালীতে ১০টি, সাতক্ষীরায় ২১১টি, শরীয়তপুরে ৬টি, ঝিনাইদহে ১৬৩টি, চুয়াডাঙ্গায় ১৫টি, কুষ্টিয়ায় ১৫টি, মেহেরপুরে ১০টি, বগুড়ায় ১০টি, রংপুরে ৮টি, লালমনিরহাটে ৭টি, কুড়িগ্রামে ১টি, যশোরে ১৩৯টি, মানিকগঞ্জে ৫টি, ফরিদপুরে ৫টি, মাগুরায় ১০টি এবং রাজবাড়ীতে ৫টি ঘর নির্মাণ হবে। আমরা এমন উদ্যোগের সফলতা কামনা করছি।