
হত্যার হুমকি, ছিনতাই,মাদকব্যবসাসহ একাধিক মামলার আসামি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বাগালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী নেওয়াজ শরীফ নীল কারাগারে যাওয়ার পরেও বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন। নিয়োগ বিধি অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী একদিনের জন্যেও যদি জেল খাটেন তাহলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা। প্রধান শিক্ষক আপন মামা হওয়ায় ভাগ্নেপ্রীতি দেখিয়েছেন। কেবল তাই না, নৈশপ্রহরী নীলের মা নাছিমা খাতুন ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যোৎসাহী সদস্য। দপ্তরী কাম নৈশপ্রহরী নিয়োগ বিধি অনুযায়ী, ম্যানেজিং কমিটি কোনো সদস্যের সন্তান কিংবা স্বজনকে কোনোভাবেই নিয়োগ দেয়া যাবে না। কিন্তু বাগালী স্কুলের ক্ষেত্রে এসব কিছুই মানা হয়নি। ফৌজদারি মামলায় হাজত খাটার পরও নেওয়াজ শরীফ নীল দাপটের সাথে চলাফেরা করছেন। একইসাথে সন্ত্রাসী প্রকৃতির নীল এলাকার লোকজনের সাথে প্রতিনিয়ত তৈরি করছেন নানা ধরনের ঝামেলা।
এ বিষয়ে শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন আনিছুর রহমান গাজী নামে একব্যক্তি। তিনি সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসকের কাছেও অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৮ জুলাই ক্রিমিনাল দন্ডবিধির অপরাধে জড়িত থাকায় বাগালী গ্রামের রফিকুল ইসলাম গাজীর ছেলে নেওয়াজ শরীফ নীলকে এক নাম্বার আসামি করে পহেলা সেপ্টেম্বর আশাশুনি থানায় মামলা হয়। যার নাম্বার ২০৭/২০২০। এরপর ২ সেপ্টেম্বর আদালতে জামিন নিতে গেলে বিচারক নেওয়াজ শরীফ নীলকে জেলহাজতে পাঠান। সরকারি নীতিমালায় স্পষ্ট উল্লেখ আছে, কোনো সরকারি চাকরিজীবী অপরাধের সাথে জড়িত থেকে যদি জেল খাটে তাহলে মামলা হতে বেকসুর খালাস না পাওয়া পর্যন্ত তিনি সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত হবেন। একইভাবে দপ্তরী কাম প্রহরী আউটসোর্সিংয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নীতিমালা ২০১৯ এর ১১ নাম্বার ক্রমিকের খ ও গ অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, কোনো কর্মচারী ১৫ দিন অনুমোদনহীনভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তার চুক্তি বাতিল ও স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হবেন। অথচ নেওয়াজ শরীফ নীল গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ২১ দিন জেলহাজতে ছিলেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তার বড় মামা হওয়ায় আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে উপজেলা প্রাথমিক ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করে নেওয়াজ শরীফকে চাকরিতে বহাল রেখেছেন বেআইনিভাবে। অভিযোগ,এলাকার লোকজনের। এ বিষয়ে ৬ সেপ্টেম্বর ও ২০ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। নেওয়াজ শরীফ নীল এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, জুয়াবাজ ও জমি দখলকারী বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে এই নীল তার অন্যায়ের বিরোধিতাকারীদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকার ভুক্তভোগীরা।