
ম্যারাডোনা ফুটবল খেলেছেন মাত্র ২১ বছর। ৬০ বছরের জীবনে ৩৯ বছর ছিলেন ফুটবলের বাইরে। ২১ বছর ফুটবল মাঠে নিপুণভাবে যেসব ছবি এঁকেছিলেন তার জন্যে অনেকেই তাকে বলে থাকেন সর্বকালের সেরা ফুটবলার। বুধবার আর্জেন্টিনার স্থানীয় সময় বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৬০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এই ফুটবল কিংবদন্তি। তার মৃত্যুতে শুধু ক্রীড়াঙ্গনেই না, বিশ্বে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে বইছে শোক। শুধু আর্জেন্টিনা না, পুরো বিশ্বই ম্যারাডোনার মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ। নানাভাবে মানুষ স্মরণ করছে এই কিংবদন্তিকে, জানাচ্ছে তার প্রতি শোক ও ভালোবাসা। লক্ষ, কোটি ভক্ত কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে।
আরেক সর্বকালের সেরা ফুটবলার ব্রাজিলের পেলে যিনি কালো মানিক বলে পরিচিত তিনি বলেছেন, ‘ওপারে দু’জন আবার ফুটবল খেলবো।’ মেসি-রোনালদো-সালহা থেকে শুরু করে সাবেক এবং বর্তমান তারকারা শোকাহত। এমনকি ক্রিকেটাঙ্গনও শ্রদ্ধা জানিয়েছে ম্যারাডোনার প্রতি।
এই কিংবদন্তির মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি কাঁদছে তার নিজের দেশ আর্জেন্টিনা এবং ইতালির শহর নেপলস। ফুটবল রাজপুত্রের বিদায়ে আর্জেন্টিনায় তিনদিনের শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তিনি টুইট করে বলেন,‘তুমি আমাদেরকে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গায় তুলে দিয়েছিলে। তুমি আমাদেরকে ব্যাপকভাবে সুখি করেছিলে। তুমি ছিলে সর্বকালের সেরা। তুমি আমাদের মাঝে ছিলে, এ কারণে আমরা ছিলাম ধন্য। সারাজীবনই তোমাকে আমরা মনে রাখবো।’ তিনি বলেছেন, ‘আর্জেন্টিনার মানুষ সবচেয়ে বাজে খবরটি পেল। আমি যখনই খবরটি শুনেছি তা বিশ্বাস করতে পারিনি। আমি অবিশ্বাস্য রকমের দুঃখভারাক্রান্ত’
এদিকে, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে বৃহস্পতিবার দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ম্যারাডোনার মৃত্যুর দিন থেকেই তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
শেষবারের মতো এই ফুটবল জাদুকরকে যাতে ভক্তরা দেখতে পারেন, সেজন্যে আর্জেন্টিনার বুয়েনস আয়ারসে অবস্থিত প্রেসিডেন্ট কার্যালয় কাসা রোসাদায় তিনদিনের জন্যে রাখা হবে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পৌঁছেছে ম্যারাডোনার মরদেহ।
ম্যারাডোনাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্যে হাজারো মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আর্জেন্টিনার রাজধানীসহ আশেপাশে রাতারাতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের প্রস্তুতি এবং শোক সংগীত পরিবেশন করা হয়।
স্তাদিও সান পাওলো স্টেডিয়ামটি ম্যারাডোনার নামে করার প্রস্তাব দিয়েছেন ইতালীয় শহর নেপলসের মেয়র লুইজি ডি ম্যাজিস্ট্রিস। বুধবার এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, সান পাওলো স্টেডিয়ামের নামটি ম্যরাডোনার নামে করা হোক। এই ম্যারাডোনার নেতৃত্বেই ১৯৮৭ ও ১৯৯০ সালে দু’টি লিগ শিরোপা জয় করেছিল নাপোলি।