এম. আইউব

খুলনা বিভাগের ২৭ টি প্রত্নতত্ত্বের তথ্য যাচ্ছে ইউনেস্কে। এসব প্রত্নতত্ত্ব রয়েছে উপকূলীয় এলাকায়। ঐতিহাসিক এসব স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণের উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর আশা করছে, প্রকল্পের মাধ্যমে ইউনেস্কো ২৭ টি স্থাপনা রক্ষায় ভূমিকা রাখবে। ফলে, এসব স্থাপনাগুলো দর্শনীয় স্থানে পরিণত হবে। হতে পারে বিনোদন স্পটও।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বিভাগীয় আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা জানিয়েছেন, খুলনা বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলে ২৭ টি স্থাপনার খোঁজ মিলেছে। এগুলো হচ্ছে, যশোরের মণিরামপুরের খেদাপাড়া মাউন্ড (ধন সওদাগরের বাড়ি), দমদম পীরস্থান, কেশবপুরের ভরত ভায়না বুদ্ধিষ্ট টেম্পেল (ভরত রাজার দেউল), দলিজহারা বুদ্ধিষ্ট বিহার (ভরত রাজার কর্মচারীর বাড়ি), ভরত রাজার বাড়ি (মানিক ফকিরের বাড়ি), সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাজিয়াড়া মাউন্ড (মালতির আমবাগান), ঝুড়িঝাড়ার ঢিবি, শাহপুরের মোল্লাপাড়া ভিটা (ভিটির পাড়), শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জের স্ট্রাকচার নিয়ার খোলপেটুয়া কলাগাছিয়া, সুন্দরবন (বানারাজপোতা), স্ট্রাকচরাল মাউন্ড বিটুইন অগ্রকোনা এন্ড সিন্ধুখালি রিভার-১, স্ট্রাকচরাল মাউন্ড নিয়ার দি কোস্প অফ অর্পনগাছিয়া সিন্ধুখালি রিভার-২, স্ট্রাকচরাল মাউন্ড অফ নর্থ ইস্ট কর্নার অফ অগ্রকোনা ক্যানাল-৩, স্ট্রাকচরাল মাউন্ড অ্যাডজাসেন্ট টু অগ্রকোনা ক্যানাল-৪ ও স্ট্রাকচরাল মাউন্ড অ্যাডজাসেন্ট টু অগ্রকোনা ক্যানাল-৫, খুলনার পাইকগাছার রেজাকপুর ক্লাস্টার (জনকের বার, শিববাড়ি বাগান), রামনগর ঢিবি, নাথপাড়া সুপারি বাগান, খুলনার কয়রার প্রতাপাদিত্যের ঘর (বড়বাড়ি) ও মসজিদকুড় মস্ক, যশোরের কেশবপুরের মির্জানগর হাম্মামখানা, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার প্রবাজপুর শাহী মস্ক, ঈদগাহ মাউন্ড (ঈদগাহ মঠ), সাতক্ষীরার শ্যামনগরের বংশীপুর শাহী মস্ক (টাংরা শাহী মস্ক), ঈশ্বরীপুর হাম্মামখানা (হাবশিখানা), জাহাজঘাটা হাম্মামখানা (কোটার বন), গোবিন্দ দেবের মন্দির ও শ্যামসুন্দর টেম্পেল।
এসব প্রত্নতত্ত্ব স্থাপনার বিষয়ে কারো কোনো রকম মতামত আছে কিনা সেটি জানতে সংস্থার খুলনা বিভাগীয় কার্যালয় বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোরে ‘আপডেটিং দি ইউনেস্কো টেনটেটিভ লিস্ট অফ বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় অংশীজন সভার আয়োজন করে। যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ সভা। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হান্নান মিয়া। তিনি বলেন, উপকূলীয় এলাকার মানুষ কত সংগ্রাম করে টিকে ছিল সেটি জানতে এসব স্থাপনা সংরক্ষণের গুরুত্ব রয়েছে। এ কারণে কেবল কথা না বলে গবেষণা চালাতে হবে। যেটি শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা। দেশব্যাপী প্রত্নতত্ত্বের বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য প্রদান করেন ন্যাশনাল কনসালটেন্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ডক্টর স্বাধীন সেন।
উন্মুক্ত আলোচনায় মতামত ব্যক্ত করেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজ আলম, মণিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম, যশোর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর আহসান হাবীব, প্রেসক্লাব যশোরের সেক্রেটারি আহসান কবীর, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান, যশোর সরকারি এমএম কলেজের ভূগোল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সোলজার রহমান।