
গ্রামের কাগজসহ পত্রিকান্তরে প্রকাশ, অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহার করোনাকালে এমন বেড়েছে যে আগামী কয়েক বছরেই আমাদের চেনা অনেক রোগ হয়ে উঠতে পারে দুরারোগ্য। দেখা দিতে পারে নতুন নতুন মহামারি! অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলোর যে সময় লাগবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল তার সময়কাল এগিয়ে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার হতে দেড় থেকে দুই যুগ সময় লাগে। অথচ মানুষের খামখেয়ালির কারণে সেটা তারচেয়ে দ্রুত অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে রোগের বিরুদ্ধে।
চিকিৎসকরা বলছেন, কোভিড ১৯-এর কোনও স্বীকৃত চিকিৎসা নেই। করোনা মহামারির প্রথম থেকেই তাই সাধারণ মানুষ নিজেরা নিজেদের প্রেসক্রিপশন দিতে শুরু করে। স্বজনের কাছ থেকে শুনে হোক কিংবা ফেসবুকে দেখে, অ্যান্টিবায়োটিক খেয়েছেন অনেকে। চিকিৎসকরাও অ্যান্টিবায়োটিকের নাম বলে চলেছেন সামাজিক গণমাধ্যমগুলোতে। ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করা ও বংশবৃদ্ধি রোধে ব্যবহৃত হয় অ্যান্টিবায়োটিক। এর যথেচ্ছ ব্যবহার হলে ব্যাকটেরিয়াগুলো তখন এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিখে যায়। কমে যায় অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা। তখনই বলা হয় ব্যাকটেরিয়াটি ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ হয়ে গেছে। তখন যতই অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা হোক না কেন, সেটা আর কাজ করবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথম থেকেই বারবার তাদের ওয়েবসাইটে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করে আসছে। তারা বলেছে, কোভিড-১৯ একটি ভাইরাল অসুখ। এটিতে অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিপ্যারাসাইটিক বা অ্যান্টি প্রটোজল ড্রাগের কোনও ভূমিকা নেই। গত ৮ মাস তাদের মিথ ব্লাস্টার সাইটে কাভার হিসেবে রাখার পরও কেউ এ কথাকে বিশেষ পাত্তা দেয়নি।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের রক্তপরিসঞ্চালন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেশিরভাগ প্রেসক্রিপশনে এখন অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে ম্যারোপেনাম এবং মক্সিফ্লোক্সাসিন ইনজেকশন। সাধারণত আইসিইউতে যে রোগীদের শরীরে অন্য সব অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না, তাদের ম্যারোপেনাম দিতে হয়। ঢাকার বাইরে থেকে এরকম অনেক প্রেসক্রিপশনের কথা আমরা জানতে পারছি। যারা এ ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক নিচ্ছে, তাদের শরীরে পরে আর কোনও অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না।’ আমাদের সকলের উচিৎ পেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ সেবন না করা।