
নড়াইলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সেপ্টেম্বর মাসের চেয়ে অক্টোবর মাসে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। তবে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডেঙ্গুরোগীরা সাধারণ রোগীর মত হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যাদিও এসব রোগীদের মশারির মধ্যে থাকার নিয়ম রয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবর মাসে ১৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২জন। সব শেষ শেখ ফজলুল হক রোমান (২৮) নামের জগন্নাথ বিশ্ব বিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাতে নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত রোমান নড়াগাতি থানার খসিয়াল ইউনিয়নের টোনা গ্রামের শেখ অলিয়ার রহমানের ছেলে। সে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের (১০ম ব্যাচ) এর শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত ২৯ অক্টোবর শনিবারে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ নিয়ে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। রোববার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কিনা তা জানার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষা করা হয়। রাতে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নড়াইল পৌরসভার মাছিমদিয়া গ্রামের রিয়াদ মোল্যা বলেন, আমি সম্প্রতি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসলে ডেঙ্গু রোগীর লক্ষণ দেখা দেয়। গত ২৬ অক্টোবর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখন ভালো আছি।
হাসপাতালে ভর্তি সদর উপজেলার বিড়গ্রামের রোগী অসিম বিশ্বাস বলেন, আমি স্থানীয় বাজারে ব্যবসা করি বাড়িতে থেকেই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গরমের কারণে মশারি টানানোহয়নি বলে জানান তিনি।
লোহাগড়া উপজেলার শরশুনা গ্রামের আশরাফুল বলেন, আমি কয়েকদিন আগে একটি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা দিতে ঢাকায় গিয়েছিলাম, সেখানে তিনদিন ছিলাম। বাড়িতে আসার পর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হই।
নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, অক্টোবর মাসে ৮৮জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ৫ জন রোগী ভর্তি আছে। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. নছিমা আকতার বলেন, জেলার হাসপাতাল গুলোতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। জেলায় মোট আক্রান্ত ২২৬ জন। এর মধ্যে সেপ্টম্বর মাসে জেলায় ৬৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও অক্টোবর মাসে ভর্তি হয়েছে ১৪৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় এবং স্থানীয়ভাবে আক্রান্তরা রয়েছে।
দিনে ও রাতে মশারি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনার পাশাপাশি বাড়ির আশেপাশে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কোন বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি।